রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে জোর দিয়েও চাপ কমছে না রিজার্ভে

রিজার্ভের উপর চাপ কমাতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এরমধ্যে আমদানি কমানো, রপ্তানি বাড়ানো এবং রেমিট্যান্সের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এতেও রিজার্ভের উপর চাপ কমছে না। ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ কমে দাড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিলো ৪৬ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।

আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এর চাপ পড়েছে রিজার্ভের উপর। এতে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। রিজার্ভ থেকে যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করা হচ্ছে, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স থেকে সেই পরিমাণ ডলার রিজার্ভে জমা হচ্ছে না। ফলে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।

সূত্র জানায়, গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ বেড়ে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠেছিল। এরপর নানা সংকটে কমতে থাকে রিজার্ভ। গত বছরের অক্টোবরে রিজার্ভ কমে ৪৬ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিলো। এরপর চলতি বছরের জুনে রিজার্ভ আরও কমে দাড়ায় ৪১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। এরপর বুধবার (১২ অক্টোবর) রিজার্ভ কমে দাড়ায় ৩৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আবুল কালাম আজাদ বলেন, কবে নাগাদ রিজার্ভ উর্ধ্বমূখী হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই আশা করছি খুব শিগগিরই রিজার্ভ উর্ধ্বমূখী হবে।

ডলারের দরবৃদ্ধি ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ব্যাংকগুলো রপ্তানি বিল নগদায়ন ও সরাসরি প্রবাসীদের থেকে ডলার কেনায় ৯৯ টাকা দর বেঁধে দিয়েছে। এছাড়া ডলার কেনার গড় দরের সঙ্গে এক টাকা যোগ করে আমদানি দায় নিষ্পত্তি ও আন্তঃব্যাংকে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। আজ রোববার আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলার সর্বনিম্ন ১০৩ টাকা ১৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা ৫৫ পয়সায় বিক্রি হয়।

রোববার (১৬ অক্টোবর) সরকারি খাতের সোনালী ব্যাংক প্রতি ডলার ১০৬ টাকা ৬৫ পয়সায় বিক্রি করেছে। রূপালী ব্যাংক ১০৬ টাকা ৯৫ পয়সায় বিক্রি করেছে, অগ্রণী ব্যাংক ১০৮ টাকায় প্রতি ডলার কিক্রি করেছে, জনতা ব্যাংক ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা প্রতি ডলার বিক্রি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে জানা যায়, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগে সেপ্টেম্বরে আগের মাসের তুলনায় এলসি খোলা কমেছে ৬৩ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বর মাসে ৫৭০ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়। যা আগস্টে ছিলো ৬৩৩ কোটি ডলারে। একই সময়ে এলসি নিষ্পত্তিও কমে।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) কয়েকটি ব্যাংকের কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৩ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত বিক্রি ছাড়িয়েছে চার বিলিয়ন ডলার। এতে রিজার্ভ কমে দাড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার বিক্রির পরিমাণ দাড়িয়েছে ৪০৮ কোটি ডলার। এর বিপরীতে বাজার থেকে উঠে এসেছে ৩৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। গত অর্থবছর বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ৭০ হাজার কোটি টাকার মতো উঠে এসেছিলো।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.