সাফজয়ী আঁখির বাবাকে হুমকি, ২ পুলিশ ক্লোজড

সাফ উইমেন্স ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ জিতা ফুটবলার আঁখি খাতুনের বাবাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে শাহজাদপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রশিদ ও কনস্টবল আবু মুসাকে ক্লোজড করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মণ্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিন সকালে অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।

এসপি আরিফুর রহমান বলেন, ‘ফুটবলার আঁখির বাবাকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ওই দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। একই সঙ্গে সহকারী পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল)-কে বিষয়টি তদন্তের জন্য বলা হয়েছে।’

জানা যায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের পাড়কোলা গ্রামের আঁখির বাড়িতে উপস্থিত হয়ে এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা নোটিশ নিয়ে উপস্থিত হন। সে সময় শাহজাদপুর থানার এএসআই মামুনুর রশিদ আঁখির বাবা আক্তার হোসেনকে জানান, দ্বাবারিয়া গ্রামের মৃত মেছের প্রাং-এর ছেলে মো. মকরম প্রাং বাদী হয়ে সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ্বাবারিয়া মৌজায় জোর করে জমি দখলের পাঁয়তারার অভিযোগে একটি মামলা করেন। ফলে খুন-জখম হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় আদালত উভয়পক্ষকে ওই নালিশি সম্পত্তিতে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে বলেছেন। নোটিশে ফুটবলার আঁখিসহ পাঁচ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। এএসআই মামুনুর রশিদ এ সংক্রান্ত আদালতের নোটিশটি আঁখির বাবা আক্তার হোসেনকে সই করে গ্রহণ করতে বলেন। তিনি তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে এএসআই মামুনুর রশিদ ক্ষুব্ধ হয়ে তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

এ বিষয়ে আঁখি বাবা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার মেয়ে আঁখিকে ওই জমি দিয়েছেন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটি কুচক্রীমহল জাল দলিলের মাধ্যমে ওই জমি দখলের পাঁয়তারা করছে। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সেই সঙ্গে শাহজাদপুর থানার ক্লোজড হওয়া দুই পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে শাহজাদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার পারকোলা গ্রামে সরকারের ২৫ শতক খাস জায়গা রয়েছে। সেখান থেকে চলতি বছরের মে মাসে আঁখি খাতুনকে আট শতক জায়গা দেওয়া হয়েছে। সেটা এখন আঁখির পরিবারের দখলে আছে। বাকি জায়গা আমাদের দখলে রয়েছে। কিন্তু কয়েক দিন আগে ওই গ্রামের মোকরাম প্রামাণিক নামের একজন পুরো জায়গায় তার দাবি করে কোর্টে একটা মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কোর্ট থেকে একটা নোটিশ দেওয়া হয়। সেই নোটিশের কপি আঁখির বাবার কাছে দিতে গিয়েই এএসআই মামুনের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়।’

উল্লেখ্য, পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমদ শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের দ্বাবারিয়ায় ৮ শতক জমি ফুটবলার আঁখির নামে দেন। কয়েকদিন আগে আনুষ্ঠানিকভাবে আঁখির বাবা-মায়ের হাতে দলিল হস্তান্তর করা হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.