সৌদিতে মানুষের তৈরি চাঁদের আলো ও নজরদারির শহর

তেলের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আয়ের আরো উৎসের সন্ধানে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চাইছে সৌদি আরব৷ সে কারণে ৫০০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে নিওম নামে একটি ব্যবসায়িক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে৷এর আওতায় ‘দ্য লাইন’ নামে একটি আবাসন প্রকল্পও বাস্তবায়ন করতে চায় সৌদি৷

সম্প্রতি এই প্রকল্পের নকশা প্রকাশ করা হয়েছে৷ ‘লাইন’টি প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে৷ প্রস্থ হবে ২০০ মিটার৷ উচ্চতা হবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫০০ মিটার৷ এর মধ্যে প্রায় ৯০ লাখ মানুষের বাসস্থান থাকবে৷ এটি একটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত প্রকল্প হতে যাচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে৷ যেমন সেখানে যাতায়াতের জন্য ড্রোন থাকবে৷ ফলে সেটি জিরো-কার্বন এলাকা হবে৷ এমনকি মানুষের তৈরি চাঁদও থাকবে বলে জানানো হয়েছে৷

বাসিন্দাদের আরো বেশি সুযোগ-সুবিধা দিতে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করা হবে৷ তবে সেই তথ্য বাসিন্দাদের কাছ থেকে কিনে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জোসেফ ব্র্যাডলি৷ তথ্য কিনে নেয়ার বিষয়টি বিশ্বে এটিই প্রথম হতে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি৷

একটি উদাহরণ দিয়ে ব্র্যাডলি বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি তার লোকেশন, স্বাস্থ্য ও চলাফেরা সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে থাকেন, তাহলে সেগুলো ব্যবহার করে ঐ ব্যক্তি যদি অনেকদিন ধরে কোথাও না যান, তাহলে তার খোঁজখবর নেয়ার জন্য ড্রোন পাঠানো যাবে৷ একজন বাসিন্দা যদি চান তাহলেই শুধু তার তথ্য ব্যবহার করা হবে৷ এক্ষেত্রে তার কাছ থেকে একটি অনুমতিপত্র নেয়া হবে৷ সেখানে কোন ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য, কে ও কীভাবে ব্যবহার করতে পারবে সব লেখা থাকবে৷ কোনো ব্যক্তি চাইলে যে-কোনো সময় এই অনুমতি প্রত্যাহার করে নিতে পারবেন বলেও জানান তিনি৷

এতক্ষণ পড়ার পর আপনার কী মনে হচ্ছে? দ্য লাইনে থাকার সুযোগ হলে কি আপনি তথ্য বিক্রি করবেন? নাকি তথ্য বিক্রি বা দেয়ার বিষয়টি আপনার পছন্দ হচ্ছে না? সমস্যা নেই, বিশ্বে দুই ধরনের মানুষই আছে৷ একদল মনে করেন তাদের কাছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ৷ বিশেষ করে সৌদি আরবের মতো দেশে, যেখানে মানবাধিকার পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়, সেখানে ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া ঠিক হবে না৷

আরেকদল মনে করছেন, অনলাইন ব্যবহারের কারণে প্রতিদিনই কেউ না কেউ আপনাকে না জানিয়ে আপনার তথ্য নিয়ে নিচ্ছে৷ সেক্ষেত্রে দ্য লাইন কর্তৃপক্ষ বলছে, আপনার কাছ থেকে তথ্য কিনে নেয়া হবে৷ তাই তথ্য বিক্রি করে কিছু আর্থিক সুবিধা নিয়ে নেয়াই ভালো৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.