রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় ছাড়

এখন থেকে বিদেশি কোনো মানি এক্সচেঞ্জ হাউজের সঙ্গে চুক্তি করতে (ড্রইং অ্যারেঞ্জমেন্ট) বাণিজ্যিক কোনো ব্যাংকের আর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে না। চলমান ডলার সংকট নিরসনে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (১০ আগস্ট) এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব অনুমতি ছাড়াই ব্যাংকের এডি শাখাগুলো বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউসের সাথে ড্রয়িং অ্যারেঞ্জমেন্ট করতে পারবে।

এতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দেশে থাকা বাংলাদেশ মিশন বা হাই কমিশনের কাছ থেকেও বিদেশি মানি এক্সচেঞ্জের বিষয়ে ইতিবাচক সুপারিশপত্র ছাড়াও চুক্তি করা যাবে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, রেমিট্যান্স বিতরণ করার সময় এডি সুবিধাভোগীদের উপর কোন ধরনের চার্জ আরোপ করতে পারবে না। প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত অন্যান্য নির্দেশনাবলী অপরিবর্তিত থাকবে। নির্দেশনাটি শিগগিরই বাস্তবায়ন করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।

জানা গেছে, বিদেশ থেকে প্রবাসীদের রেমিটেন্স আনতে ওই দেশে ব্যাংকের নিজস্ব এক্সচেঞ্জ হাউজ খুলতে হয় কিংবা বিদেশি কোনো এক্সচেঞ্জের সঙ্গে চুক্তি করতে হয়। ওই চুক্তিকে ব্যাংকিং ভাষায় ড্রইং অ্যারেঞ্জমেন্ট বলে। দেশীয় কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিদেশি কোনো মানি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করতে এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হত। সেই সঙ্গে ওই দেশে থাকা বাংলাদেশ মিশন বা হাই কমিশনের কাছ থেকেও বিদেশি মানি এক্সচেঞ্জের বিষয়ে ইতিবাচক সুপারিশপত্র আনতে হত।

এখন থেকে এ দুটি বিষয়ে ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়মে চুক্তি করার পর বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে হবে। আর বাংলাদেশ মিশনের প্রত্যয়নপত্র ছাড়াও চুক্তি করা যাবে।

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে দেশে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে আমদানি ব্যয়। কিন্তু সেই তুলনায় রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স বাড়ছে না। ফলে সংকট তৈরি হচ্ছে ডলারের বাজারে। আর এই সুযোগে বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যবহৃত প্রধান এ মুদ্রাটির দাম পাগলা ঘোড়ার মতই বাড়ছে।

ব্যাংকগুলোকে এখন সর্বোচ্চ ১১০ টাকা দিয়ে বিদেশি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে। আর খোলা বাজারে ডলারের দাম উঠেছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকায়। এ অবস্থায় রেমিট্যান্স বাড়াতে বৈধপথে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দেশে আনার বিষযে জোর দিচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স আহরণে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।

আগে, বিদেশ থেকে কোনো এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে বছরে কী পরিমাণ রেমিট্যান্স আনা যাবে, তারও একটি সীমা নির্ধারণ করা ছিল। হুন্ডি ও বৈধ আয় বহির্ভূত অর্থ লেনদেন ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি ডলার সঙ্কটের মধ্যে সেই সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন দৈনিক যে কোনো পরিমাণে রেমিট্যান্স আনার সুযোগ রয়েছে। আবার রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো ধরনের কাগজপত্রও লাগছে না প্রবাসী বা মানি এক্সচেঞ্জগুলোর।

অর্থসূচক/এএইচআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.