সড়ক দুর্ঘটনায় জন্ম নিয়ে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া ময়মনসিংহের ত্রিশালের সেই শিশুকে দেখাশোনার জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এ কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। তার পরিবারকে আপাতত ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে এ টাকা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে শিশু ও তার পরিবারকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন। ১৮ জুলাই ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় জন্ম নেওয়া শিশুর ১৮ বছর পর্যন্ত যাবতীয় খরচ রাষ্ট্রকে বহনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন জনস্বার্থে এ রিটটি দায়ের করেন। রিটে শিশুর যাবতীয় খরচ বহন ও তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
গত শনিবার দুপুরের দিকে ত্রিশালের কোর্টভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। এ সময় অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। ভূমিষ্ঠ হয়ে রাস্তায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে নেওয়ার পরই জানা যায়, জীবিত আছে নবজাতকটি। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতকটিকে ময়মনসিংহ সদরের সিবিএমসি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে এক্সরে রিপোর্টে জানা যায়, তার ডান হাতের দুটি হাড় ভেঙে গেছে। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে নগরীর লাবীব হাসপাতালে শিশুটি চিকিৎসাধীন ছিল। জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ায় সেখান থেকে সোমবার রাতে শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অর্থসূচক/এএইচআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.