গভর্নর শূন্য বাংলাদেশ ব্যাংক

দীর্ঘ ছয় বছর তিন মাস বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন শেষে রোববার (৩ জুলাই) বিদায় নিয়েছেন ফজলে কবির। এরই মধ্যে নতুন গভর্নর হিসেবে আব্দুর রউফ তালুকদারকে নিয়োগ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় । তবে আইনি জটিলতার কারণে এখনই যোগদান করতে পারছেন না নিয়োগ পাওয়া নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

তিনি আগামী ১২ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেবেন। ফলে সোমবার (৪ জুলাই) থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত গভর্নরের পদ খালি থাকবে। তবে গভর্নরের অবর্তমানে ডেপুটি গভর্নররা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে এ দায়িত্ব পালন করবেন।

সোমবার (৪ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম অর্থসূচককে এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজ থেকে নতুন গভর্নর যোগদানের আগ পর্যন্ত দৈনিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে চার ডেপুটি গভর্নর স্ব স্ব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবেন। আর জ্যেষ্ঠতম হিসেবে ডেপুটি গভর্নর-১ আহমেদ জামাল গভর্নরের দৈনিক ডাক দেখবেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাবেন। তবে বিশেষ প্রয়োজনে গভর্নরের সাথে পরামর্শ করতে পারবেন।

এর আগে রোববার (৩ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব মো. জেহাদ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংককে গভর্নরের অবর্তমানে দৈনিক কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়।

ওই আদেশে বলা হয়, গভর্নর ফজলে কবিরের মেয়াদপূর্তিতে আগামী ৪ জুলাই থেকে নতুন গভর্নর যোগদানের পূর্ব পর্যন্ত দৈনন্দিন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নররা স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের দৈনিক কার্যক্রম করবেন। ডেপুটি গভর্নর-১ আহমেদ জামাল গভর্নরের দৈনিক ডাক দেখবেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রেরণ করবেন।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের সরকারি চাকরির মেয়াদ ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত। গভর্নর পদে যোগ দিতে হলে তাকে সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিতে হবে। আগামী ১১ জুলাই থেকে তার স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন রাষ্ট্রপতির কার্যালয় অনুমোদন দিয়েছে।

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর দ্বাদশ অধ্যায়ে ‘অবসর, ইস্তফা ইত্যাদি’ বিষয়ে বিবরণ দেওয়া আছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর যেকোনো সময় একজন সরকারি কর্মচারী অবসর নিতে পারেন। তবে অবসর গ্রহণের ৩০ দিন আগে ওই কর্মচারীকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা লিখিতভাবে জানাতে হবে। আরও উল্লেখ আছে, এই ইচ্ছা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং তা সংশোধন বা প্রত্যাহার করা যাবে না।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ থাকলেও ৪ জুলাই গভর্নর পদে যোগ দিলে আব্দুর রউফ তালুকদারকে আইন লঙ্ঘন করতে হবে এবং পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রেও তার সুবিধা কমবে।

সাধারণত তিন থেকে চার দিন বা বড়জোর এক সপ্তাহ সময় হাতে নিয়ে বড় ধরনের পদে নিয়োগ দিয়ে থাকে সরকার। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আব্দুর রউফ তালুকদারকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তিন সপ্তাহ আগে। সেদিন ছিল ১১ জুন, অর্থাৎ সরকারি ছুটির দিন শনিবার। এ কারণেই দেরিতে যোগদান করবেন নতুন গভর্নর।

আগামী ১০ জুলাই ঈদুল আজহা উদযাপন হবে। পরদিন ছুটি। এরপর অফিস খুলবে ১২ জুলাই। ওইদিনই নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দেবেন আব্দুর রউফ তালুকদার।

অর্থসূচক/এমএস/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.