জুরাইনের ঘটনায় আইনজীবীর রিমান্ড বাতিল প্রশ্নে রুল খারিজ

রাজধানীর জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দুই আইনজীবীর রিমান্ড বাতিলের প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আইনজীবীদের রিমান্ড বাতিল ও জামিন হওয়ায় রুলের কার্যকারিতা না থাকায় আদালত এ আদেশ দেন।

রোববার (১৯ জুন) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট মুরাদ রেজা, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার অনিক আর হক প্রমুখ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী ও শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

শুনানিকালে ব্যারিস্টার অনিক আর হক আদালতকে বলেন, মামলাটিতে বিচারিক আদালত দুই আইনজীবীর রিমান্ড বাতিল করেছেন এবং তাদের জামিন দিয়েছেন। তাই এ মামলা আমরা চালাতে চাচ্ছি না। পরে আদালত রুল খারিজ করে আদেশ দেন।

পরে আপিল বিভাগ ওই মামলায় হাইকোর্টের জারি করা রুল খারিজের আদেশ দেন।

এর আগে গত ৭ জুন সকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আদালতে আসার পথে আইনজীবী দম্পতি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির দুই জন সদস্য সোহাবুল ইসলাম রনি ও তার স্ত্রী ইয়াসিন জাহান নিশান এর সঙ্গে জুরাইন পুলিশ বক্সের সন্নিকটে একজন ট্রাফিক সার্জেন্টের বাগবিতণ্ডা ও নারী আইনজীবীকে হেনস্তার ঘটনার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় দুই জন আইনজীবীসহ অপর বিজ্ঞ আইনজীবী ইয়াছিন আরাফাত ভূঁইয়াকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।

পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে এবং অজ্ঞাতনামা সাড়ে ৪শ’ জনের বিরুদ্ধে শ্যামপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গত ৮ জুন তিনজন আইনজীবীকে আদালতে তোলা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজতে তাদের মধ্যে বিশেষ করে সোহাবুল ইসলাম রনিকে নির্যাতনের বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি অপর দুই আইনজীবীর জামিন আবেদন নাকচ করে পুলিশি আবেদনে তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন। পরে আইনজীবীদের প্রতিবাদের মুখে সে রিমান্ড আদেশ মৌখিকভাবে ১২ জুন পর্যন্ত পেন্ডিং রাখার আদেশ দেন বিচারক।

এদিকে রাজধানীর জুরাইনে ঘটনায় দুই আইনজীবীকে রিমান্ডে নেওয়ায় ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ ফজলে ইলাহী। গত ৯ জুন দায়ের করা রিটটির শুনানির নিয়ে জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে আইনজীবী ও জনতার সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলার নথি তলব করেন হাইকোর্ট। আজ রবিবারের (১২ জুন) মধ্যে নিম্ন আদালতকে এসব নথি উচ্চ আদালতে পাঠাতে বলা হয়। একইসঙ্গে ওই মামলায় দুই আইনজীবীকে রিমাণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এসব আদেশ দেন।

সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী, অ্যাডভোকেট আজহার উল্লাহ ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জরুল হক, ব্যারিস্টার অনিক আর হকসহ শতাধিক আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী ও শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

পরে গত ১৩ জুন ওই ঘটনায় করা মামলায় হাইকোর্টের নথি তলবের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালত। একইসঙ্গে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য মামলাটি প্রেরণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি আপিল বিভাগের শুনানিতে আসে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.