চাকরি ফিরে পেতে চাকরিচ্যুত ব্যাংকারদের মানববন্ধন

করোনাকালীন সময়ে চাকরি হারানো ব্যাংকাররা তাদের চাকরি ফিরে পেতে মানববন্ধন করেছেন। আজ বুধবার (১৫ জুন) রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে চাকরি হারানো অর্ধ শতাধিক কর্মী অংশ নেন। এ সময় তারা চাকরি ফেরত চেয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।

জানা গেছে, খরচ কমানোর নামে করোনার সময় কর্মী ছাঁটাই করেছে অনেক ব্যাংক। আবার বিভিন্নভাবে অনেককে পদত্যাগ করতেও বাধ্য করা হয়েছিল। পরে চাকরিচ্যুত বা পদত্যাগে বাধ্য হওয়া এসব কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনা মানছে না ব্যাংকগুলো। এরই পেক্ষিতে তারা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ছাঁটাই ও পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ব্যাংকাররা জানান, করোনার সময় সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই অন্যায় ও অমানবিকভাবে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক ছয় হাজারের মতো কর্মীকে পদত্যাগ করতে বাধ্য ও ছাঁটাই করে। এমনকি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায়ও কিছুসংখ্যক কর্মকর্তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।

তারা আরও জানান, বেআইনিভাবে পদত্যাগে বাধ্য ও ছাঁটাই করা কর্মকর্তাদের বহালের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্তপূর্বক প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে সার্কুলার (বিআরপিডি সার্কুলার নং- ২১ তারিখ ১৬-০৯-২০২১) জারি করেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আবেদন করার পরও অনেক ব্যাংক তাদের কর্মীদের বহাল করছে না।

জানা গেছে, ব্যাংকারদের অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর বেসরকারি খাতের ছয়টি ব্যাংকে কর্মী ছাঁটাই বিষয়ে বিশেষ পরিদর্শনে নামে। পরিদর্শনে দেখা যায়, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এই ব্যাংকগুলোর মোট তিন হাজার ৩১৩ জন কর্মকর্তা ‘স্বেচ্ছায়’ চাকরি ছেড়েছেন। এর মধ্যে বয়স থাকার পরও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ দেখানো হয়েছে তিন হাজার ৭০ জনকে। এছাড়া ২০১ জনকে অপসারণ, ৩০ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ১২ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করা হয়েছে। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ দেখানো বেশির ভাগই জানিয়েছেন, পদত্যাগের জন্য মৌখিকভাবে তাদের একটি সময় দেওয়া হয়েছিল। ওই তারিখের মধ্যে পদত্যাগ না করলে কোনো সুবিধা দেওয়া হবে না এ ভয় দেখানো হয়। এমন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাধ্য হয়ে তারা পদত্যাগ করেন।

তারা বলেন, অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুতিতে ব্যাংকগুলোর উন্নয়নে অবদান রাখা কয়েক হাজার অভিজ্ঞ ব্যাংক কর্মকর্তা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাগাদা দেওয়ার পরও বেশির ভাগ ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মীদের বহালে বিভিন্নভাবে কালক্ষেপণ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান আসেনি।

তাই বাধ্য হয়ে আমাদের এ প্রতিবাদ। আমাদের একটাই দাবি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করুক। এ সময় তারা এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.