অর্থপাচারকারীদের ‘সাধারণ ক্ষমা’র প্রস্তাবে ফরেন চেম্বারের উদ্বেগ

বিদেশে পাচার করা অর্থ অবাধে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিদেশী শিল্প-উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফআইসিসিআই)। এই সুযোগের ফলে আগামী দিনে দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে বলে সংগঠনটির আশংকা।

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় পাঠানো এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে তারা এই বাজেট সম্পর্কে তাদের মতামত তুলে ধরেছে।

এর আগে একইদিন বিকালে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দিতে আয়কর অধ্যাদেশে একটি নতুন বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করেন। এর আওতায় মাত্র ৭ শতাংশ আয়কর পরিশোধ করলেই বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে এনে বৈধ করা যাবে। শুধু তা-ই নয়, আয়কর কর্তৃপক্ষসহ কোনো সংস্থা এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করবে না।

পাচারকৃত টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগকে এফআইসিসি পাচারকারীদের সাধারণ ক্ষমা (Amnesty) হিসেবে দেখছে। আর এই ধরনের ক্ষমাকে তারা কোনোভাবেই সমর্থন করে না বলে জানিয়েছে।

ঘোষিত বাজেটের আরও কিছু প্রস্তাব সম্পর্কে উদ্বেগ জানিয়েছে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এই ফোরাম। এর মধ্যে আছে-ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডে প্রদেয় অনুদানকে ব্যয় হিসেবে অগ্রাহ্য করা, মোবাইল ফোন ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের বিলে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ, করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত রাখা ইত্যাদি।

এফআইসিসির মতে, ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডে প্রদেয় অনুদানকে ব্যয় হিসেবে অগ্রাহ্য করা হলে তা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মুনাফার উপর চাপ তৈরি করবে। অন্যদিকে মোবাইল ফোন ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের বিলে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হলে তা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে।

বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কমানোর বিষয়টিকেও উদ্বেগজনক মনে করছে তারা। তাদের মতে, এর ফলে এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নের গতি ধীর হয়ে পড়বে। পরিণামে বাড়বে বাস্তবায়নের ব্যয়। এফআইসিসি বরাদ্দ না কমিয়ে প্রকল্পের গুণগত বাস্তবায়নের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

আয়কর সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রস্তাবকে ইতিবাচক মনে করছে সংগঠনটি। এগুলো হচ্ছে- করপোরেট কর হার হ্রাস, রপ্তানিমুখী সকল শিল্পখাতে ১২ শতাংশ করপোরেট কর নির্ধারণ, সবুজ কারখানায় ১০ শতাংশ কর ধার্য, একীভূতকরণের সংজ্ঞা পরিবর্তন ইত্যাদি।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.