রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: বাড়ি ছেড়েছে ৫০ লাখ মানুষ

ইউক্রেনের ডনবাসে রাশিয়ার হামলা চলছে। বোমাবর্ষণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। লিভিভের উত্তরাঞ্চলে কয়েক দফায় মিসাইলের আঘাতে ৭ জন নিহত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫০ লাখ ইউক্রেনিয়ান তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিবিসির সর্বশেষ আপডেটে এ তথ্য জানা গেছে।

ইউক্রেনের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারি জানিয়েছে, মস্কো ইউক্রেনের দোনেস্ক, লুহানস্ক ও খারখিভ অঞ্চলের প্রতিরক্ষা বেষ্টনী ভেঙ্গে প্রবেশ করছে।

জাতিসংঘ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার হাতে দু’জন ব্রিটিশ সেনা-শাউন পিনার (৪৮)ও এইডন অসলিন (২৮) আটক রয়েছে। তাদেরকে রাশিয়ার সরকারি টেলিভিশনে প্রদর্শনও করা হয়। এতে যুক্তরাজ্যে সরকারের মন্ত্রী ব্রানডন লিউস প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে দেশটির কোনো নাগরিককে ইউক্রেনে না যাওয়ার জন্য নিষেধ করেছেন।

স্কাই নিউজের সাক্ষাতকারে লিউস কে জিজ্ঞাসা করা হয় এ বিষয়ে তার সরকার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে কি-না। এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাশিয়া অঞ্চলের আশেপাশের লোকজনের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রক্রিয়ার চলমান রয়েছে। আমরা কাউকে সাহায্য করতে যাচ্ছি না।

এদিকে পোলান্ড সরকার জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার সূচনা থেকে এখন পর্যন্ত ২৮ লাখ ৩৮ হাজার ইউক্রেনীয় শরণার্থী দেশটিতে প্রবেশ করেছে। তবে কয়েক সপ্তাহে এ সংখ্যা কমতে শুরু করেছ। লোকজন নিজ দেশের উদ্দেশ্যে ফিরে যাচ্ছে।

রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে পেরে ওঠতে না পেরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ইউরোপের দেশগুলোকে অস্ত্র পাঠানোর জন্য আহবান করছেন। এদিকে ইউক্রেনের প্রধান বাণিজ্য বন্দর মারিয়াপোলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান করা সৈনিকদের কমান্ডার বিশ্বনেতাদের আহবান করেছেন তারা যাতে আশ্রয়নেয়া নাগরিকদের নিরপদে স্থানে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

প্রায় সম্পূর্ণ মারিয়াপোল এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার মিলিটারি। বিবিসির সাংবাদিক যোগিতা লিমায় যুদ্ধবিদ্ধস্ত এক পরিবারের সাথে কথা বলেছেন। ঐ পরিবার থেকে জানানো হয়েছে যে,তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে আতঙ্কিত। এদের মধ্যে কয়েকজন মারাও গেছেন। এলিসি রিবুকুনের বয়স মাত্র তের (১৩)। গত মার্চ মাসে প্রাইভেট কারে করে সে ও তার তিন বছরের ছোট বাসায় আসছিল। সে সময় গাড়িতে রাশিয়ার মিলিটারির হামলায় আগুন লেগে গেলে রিবুকুন মারা যায় কিন্তু ছোট্ট শিশুটি প্রাণে বেঁচে যায়।

সন্তান হারানো মা ইনা বিচার বলেন, আমি বিশ্বকে রাশিয়ার অপরাধ সম্পর্কে জানাতে চাই। আমি সহিংসতায় ভুক্তভোগী প্রতিটা নাগরিকের বিচার চাই। আমি চাই রাশিয়া আমাদের ভুখণ্ডের যেসব নাগরিক,শিশু ও নারীকে হত্যা করেছে তার জন্য তাকে জবাবদিহি করা হউক।

আরেকটি শিশু সেসময় যুদ্ধে আটকে পড়ে। তার নাম ইলা ববকভ। বয়স বেশি না, মাত্র তের বছর। সে তার পরিবারের সাথে বুচা শহর থেকে পালিয়েছে। ইলা বিবিসিকে জানিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হলে আমি স্তম্ভিত হয়ে পড়ি। আমি আশা করেছিলাম সাধারণ দিনের মতই আমি স্কুলে যাব, বাড়ির কাজ করব এবং খেলাধুলা করব।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.