মেশিনে কার্ড না ঢুকিয়ে লেনদেন করা যাবে

ক্রেডিট কার্ডের পাশাপাশি এবার ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ডেও পস মেশিনে কার্ড স্পর্শ না করেই লেনদেন করতে পারবে গ্রাহকরা। নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) প্রযুক্তির মাধ্যমে পস মেশিনে কার্ড না ঢুকিয়েই সব ধরনের কার্ডে এই লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে এই সেবা চালুর অনুমোদন দিয়েছে। এত দিন ব্যাংকগুলোর ক্রেডিট কার্ডে এই সেবা দেওয়ার সুযোগ ছিল। এখন ডেবিট কার্ডেও এই সেবা মিলবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই পদ্ধতিতে ক্রেডিট কার্ডের মতো ডেবিড ও প্রিপেইড কার্ডের মাধ্যমেও সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে। এই সীমার মধ্যেই কেবল এনএফসি প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ কার্ড পস মেশিনে না স্পর্শ করেই লেনদেন করা যাবে। তবে এর বেশি অঙ্কেও লেনদেন হলে আগের পদ্ধতিতেই অর্থাৎ কনট্রাক্ট ও পিনভিত্তিক পদ্ধতিতেই করতে হবে। এনএফসি প্রযুক্তিতে কার্ড পয়েন্ট অব সেলস মেশিনের কাছাকাছি ধরলেই লেনদেন হয়ে যাবে। মেশিনে কার্ড প্রবেশ বা পাসওয়ার্ড দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু লেনদেনের পরিমাণ দিতে হবে। এজন্য পৃথক মেশিন ও কার্ড চালু করতে হবে ব্যাংকগুলোকে।

এনএফসি প্রযুক্তির কার্ডে ৪ সেন্টিমিটার দূরে কার্ড রেখে লেনদেন করা যাবে। তবে পিনসহ অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল থাকবে। ফলে লেনদেনের জন্য কার্ড কারও হাতে অথবা পয়েন্ট অব সেলসে দিতে হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ছোট অঙ্কের লেনদেনে এ সেবার ব্যবহার সারা বিশ্বেই বাড়ছে। প্রতিবেশী ভারত ও চীনেও এ সেবায় অনেক গ্রাহক তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে বাংলাদেশেও এ সেবা চালু করা হচ্ছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এনএফসি প্রযুক্তিতে কার্ডের লেনদেন সহজ ও গতিশীল হওয়ায় ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এ ধরনের সেবার ব্যবহার জনপ্রিয় হয়েছে। গ্রাহকের চাহিদা বিবেচনায় ক্রেডিট কার্ডের পাশাপাশি ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ডের লেনদেনেও এই প্রযুক্তির ব্যবহার করলে ইলেকট্রনিক লেনদেন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।

নির্দেশনায় বলা হয়, ইএমভি চিপ প্রযুক্তি সম্পন্ন ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ডে এনএফসি প্রযুক্তি ব্যবহার করে লেনদেন পরিচালনা করা যাবে। ইএমভি চিপ হলো ইউরোপে, মাস্টারকার্ড ও ভিসার উদ্যোগে নির্মিত বিশেষ নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন চিপ। এনএফসি প্রযুক্তির মাধ্যমে ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ডে প্রতিবার সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে। একই সঙ্গে, এই লেনদেনে দুই স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিধান শিথিল করা হয়েছে। তবে খুদে বার্তায় এ ধরনের প্রতিটি লেনদেনের তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহককে জানাতে হবে। যেসব ব্যাংক এসব কার্ড দেবে, তারা এর মাধ্যমে দৈনিক লেনদেনের সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারবে।

জানুয়ারি মাসে দেশে দেশে ডেবিট কার্ড ছিল ২ কোটি ৫৫ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬৮ টি। আর ক্রেডিট কার্ড ছিল ১৮ লাখ ৮৮ হাজার ৯২৩ টি। এ ছাড়া প্রি পেইড কার্ড ছিল ১১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৫২ টি। বাংলাদেশে কার্ড সেবায় শীর্ষে রয়েছে দি সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

অর্থসূচক/এমএস/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.