স্বপ্ন নিয়ে বাঁচুন এবং দায়িত্বশীল হোন : তরুণদের প্রতি ওয়ালটন সিইও

নিজেকে ভালোবাসা, স্বপ্ন নিয়ে বাঁচা এবং নিজের দায়িত্বের প্রতি যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও গোলাম মুর্শেদ।

তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশ, প্রতিষ্ঠান, পরিবারের প্রতি আপনার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করুন। যেভাবে কাজ করলে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবেন, সেভাবেই নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রেখে এগিয়ে যান। তাহলেই আপনি আপন মহিমায় জ্বলে উঠতে সক্ষম হবেন।

‘ওয়ালটন প্রেজেন্টস রাইজ এ্যাবাভ অল’ শীর্ষক পাবলিক স্পিকিং ইভেন্টে এসব কথা বলেন গোলাম মুর্শেদ। শুক্রবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডন সামদানি ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড কনসালটেন্সি।

তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার গড়ে তোলার লক্ষ্যে ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে শিক্ষার্থীসহ তরুণ কর্মজীবী ও উদ্যোক্তারা অংশ নেন।

কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য রুবানা হক, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, আকিজ ভেনচার্সের সিইও সৈয়দ আলমগীর, ওরাকলের কান্ট্রি ডিরেক্টর রুবাবা দৌলা, আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান, নয়েজ জিন্স এবং লাভজেনের সহপ্রতিষ্ঠাতা মনীষ চৌহান, অভিনেতা সিয়াম আহমেদ, টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইফতেখার রাফসান ও রাবা খান। উপস্থাপনা করেন ডন সামদানি ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড কনসালটেন্সির চিফ ইন্সপিরেশন অফিসার গোলাম সামদানি ডন।

অনুষ্ঠানে প্রায় ২ হাজার অংশগ্রহণকারীর সামনে বক্তারা তাদের সাফল্য, ব্যর্থতা এবং ব্যর্থতা থেকে উঠে আসার গল্প ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

‘ভোট অব থ্যাঙ্কস’ পর্বে তরুণদের উদ্দেশ্যে ওয়ালটন সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেন, আমাদের ওপর কান্ট্রি ব্র্র্যান্ডিংয়ের দায়িত্ব রয়েছে। এ দায়িত্ববোধ আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। কারণ বাংলাদেশে আমাদের জন্ম। সুতরাং দেশের প্রতি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। এটা অনেকটা রিলে রেসের মতো। আমাদের আগের প্রজন্ম তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে তা আমাদের বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন। আমরা সে দায়িত্ব পালন করে পরের প্রজন্মের কাছে দিয়ে যাবো। এ দায়িত্ববোধটা সবসময় আমাদের মনে রাখতে হবে। কারণ যেভাবেই হোক এই দায়িত্বটা আমাদের কাছে চলে এসেছে। এটা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

প্রবীণদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তরুণদের উদ্যমের সংমিশ্রণ ঘটলেই ভালো কিছু বেড়িয়ে আসবে বলে উল্লেখ করেন গোলাম মুর্শেদ। তিনি বলেন, যে কোনো কাজেই সফলতা পেতে প্রবীণ-নবীনের সংমিশ্রণ প্রয়োজন। আমি তরুণদের বিপক্ষে না। তবে মাঝে মধ্যে নিজের পক্ষের বিপক্ষে কথা বলতে হয়, এটাই গণতন্ত্র। তরুণদের মাঝে থাকা ইগোটা ভাঙতে হবে। তাদের হতাশ হলে চলবে না। লেগে থাকতে হবে। ভালো কিছু করতে হবে। সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরো বলেন, একজন মানুষের আয়ু যদি ৭০ বছর হয়, তবে তার স্বপ্নের বয়স ৬৫ বছর। ছোটোবেলায় একধরনের স্বপ্ন থাকে। বড় হলে মানুষ আরেক ধরনের স্বপ্ন দেখে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বপ্নের ধরন পরিবর্তন হয়। তবে স্বপ্নটা সব সময়ই থেকে যায়। তাই প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে শিখুন, দায়িত্বশীল হোন।

‘কমফোর্ট জোন’ মানুষকে সামনে এগিয়ে যেতে দেয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাধারণত মানুষের কর্মজীবন হয় ৩০ বছর। এই সময়টায় মানুষের মাঝে কাজের ইচ্ছা,আকাঙ্ক্ষা , শক্তি পূর্ণমাত্রায় বর্তমান থাকে। এই ৩০ বছরে আমাদের দায়িত্ব যে কাজই করছি না কেন, সেটা ঠিকভাবে সম্পন্ন করা। এজন্য থেমে থাকলে চলবে না। যখন আপনার মধ্যে ঢুকে যাবে, ‘এই বেশ ভালো আছি’, তখনই আপনি মৃত। এই ভাবনাটা আপনাকে বেধে ফেলবে। আপনি সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন না। আপনার মধ্য থেকে কষ্ট বা পরিশ্রম করার ইচ্ছেটা চলে যাবে। তাই ‘কমফোর্ট জোন’-এ আবদ্ধ হয়ে থাকলে চলবে না।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.