যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অভিযানে আইএস প্রধান নিহত

সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিবের আতমে শহরে মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্রধান নেতা আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরাইশী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ওই হামলায় আরও ১৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ছয় শিশু ও চার নারী আছেন। খবর সিএনএন ও বিবিসির

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দেন। এক বিবৃতিতে বিশেষ অভিযানে নিয়োজিত বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। অভিযান শেষে সবাই নিরাপদে দেশে ফিরেছেন বলেও জানান জো বাইডেন।

বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে আইএসের প্রধান নেতাকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছি। অভিযানে অংশ নেওয়া সব মার্কিন সেনা সদস্য নিরাপদে ফিরে এসেছেন। দক্ষতা ও সাহসিকতার জন্য সেনা সদস্যদের ধন্যবাদ। তাদেরকে নিয়ে আমরা গর্বিত।’

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে এই হামলা চালানো হয়- উল্লেখ করে পৃথক এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ২০১৯ সালের পর এই প্রথম ইদলিব প্রদেশে বড় ধরনের হামলা করল মার্কিন বাহিনী। সেবারের হামলায় আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের প্রধান নেতা আবু বকর আল বাগদাদি নিহত হয়েছিলেন। তবে এবার আতমে শহরের যে এলাকায় হামলা হয়েছে- সেটি আইএসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও বৈরী সংগঠন আল কায়দার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আতমে শহরের যে এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে- সেখানে সন্ত্রাসীদের একটি গোপন আস্তানা ছিল এবং প্রকৃতপক্ষে এটি কোনো হামলা নয়, বরং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান।

আজ এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের অধীনে সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে মার্কিন সৈন্যদলের বিশেষ বাহিনী। অভিযান সফল হয়েছে এবং কোনো সেনা সদস্য হতাহত হয়নি।’

আতমে শহরের বাসিন্দারা বিবিসিকে বলেছেন, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে তারা প্রচুর সংখ্যক হেলিকপ্টারের শব্দ শুনতে পান এবং তার কিছুক্ষণ পর থেকেই শুরু হয় গোলাগুলি ও বোমা বর্ষণের। প্রায় দুই ঘণ্টা গুলি ও বোমার শব্দ শুনেছেন তারা। হামলার পর পুরো এলাকা ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে।

৩০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত আতমে শহরটি মূলত নিয়ন্ত্রণ করে হায়াত তাহরির আল শাম নামে একটি জঙ্গিগোষ্ঠী। কয়েক বছর আগে আল কায়দার সিরিয়া শাখার কয়েকজন সাবেক নেতা এই গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠা করেন। হায়াত তাহরির আল শাম সিরিয়ার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের কট্টর বিরোধী। আতমে তাদের অন্যতম শক্তিশালী ঘাঁটি।

২০১৫ সালে গৃহযুদ্ধ কবলিত মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল এলাকা দখল করে পৃথক রাষ্ট্র বা খিলাফত ঘোষণা করে আইএস। এই রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয় সিরিয়ার রাক্কা শহরে। সে সময় আইএসের তৎকালীন প্রধান নেতা ছিলেন আবু বকর আল বাগদাদি, যিনি ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর ইদলিব প্রদেশেই মার্কিন বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছিলেন। বাগদাদি নিহত হওয়ার পর আইএসের প্রধান খিলাফত বা নেতার আসনে বসেন কুরাইশি।

অর্থসূচক/এএইচআর

 

 

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.