মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়: পুলিশের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি

সেবাপ্রত্যাশী মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে পুলিশের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েই আইনি সেবা পেতে পুলিশের কাছে আসে। আপনারা এসব মানুষের সমস্যা ও অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। তাদের আন্তরিকভাবে আইনি সেবা দিতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না। সেবাপ্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। বঙ্গভবন থেকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদসহ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণকে দ্রুততম সময়ে পুলিশি সেবা প্রদান আপনাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। জনগণের সেবাপ্রাপ্তি সহজীকরণে আপনাদের আরও তৎপর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে অপরাধ দমন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং এবং বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে, সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশকে ‘জনবান্ধব পুলিশ ও মানবিক পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আপনাদের আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে।

মাদক সংক্রান্ত অপরাধে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, মাদক বড় সামাজিক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশের তরুণ সমাজের একটি অংশ মাদক সংক্রান্ত অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কিছু অসাধু কর্মচারীও এ অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। যা খুবই অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। যুব সমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। পুলিশকে এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নিয়ে আরও বেশি সক্রিয় ও তৎপর হতে হবে। প্রয়োজনে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ পুলিশের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের পর্যায়ে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যেন বিদেশি পুলিশ কর্মকর্তারাও বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহী হন।

২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে অগ্রগতি না হলে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম হবে না। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আত্তীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকেও এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশকে সমৃদ্ধ হতে হবে। আমি মনে করি, এ জন্য বাংলাদেশ পুলিশে একটি ‘থিংক ট্যাংক’ অত্যন্ত প্রয়োজন। এই ‘থিংক ট্যাংক’ বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কার্যক্রম ও তদন্তে বৈজ্ঞানিক কৌশলের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি তথা নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন, প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কার্যক্রমে উৎকর্ষ সাধনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সাইবার অপরাধ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপরও জোর দেন রাষ্ট্রপতি।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.