রাস্তায় শিশুর মৃত্যু, সেই হাসপাতালের মালিক আটক

রাজধানীর শ্যামলীতে আমার বাংলাদেশ হাসপাতালের বিল পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়ক দ্বন্দ্বে চিকিৎসাধীন জমজ শিশুকে জোর করে বের করে দেওয়ার পর আহমেদ নামে এক শিশুর নির্মম মৃত্যু ও অপর শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মালিককে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শুক্রবার (০৭ জানুয়ারি) দুপুরে শ্যামলী থেকে তাকে আটক করা হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিল পরিশোধ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যমজ শিশুকে জোর করে বের করে দেওয়ার পর আহমেদ নামে এক শিশুর মৃত্যু হয় এবং অপর শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মালিককে আটক করা হয়েছে। তবে আটক হাসপাতালের পরিচালকের নাম জানায়নি র‌্যাব।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এ বিষয়ে আজ বিকেলে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে ভোগা ছয় মাস বয়সী যমজ দুই শিশু- আহমেদ ও আব্দুল্লাহকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন মা আয়েশা বেগম। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শিশু দুটিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়ার কথা বলেন সোহরাওয়ার্দীর চিকিৎসকরা। তবে সেখানে আইসিইউ বেড না থাকায় দালালের মাধ্যমে কম খরচে গত ২ জানুয়ারি জমজ দুই সন্তানকে রাজধানীর শ্যামলীর ‌‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে’ নেন আয়েশা বেগম।

সেখানে তিনদিন আইসিইউতে রেখে চিকিৎসার পর তাকে এক লাখ ২৬ হাজার টাকা বিলের কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ওই টাকা যোগাড়ের সাধ্য নেই জানানোর পর আয়েশার সঙ্গে রাগারাগি করেন হাসপাতালের পরিচালকসহ দায়িত্বে থাকা অন্য কর্মকর্তারা।

আয়েশার দাবি, বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার-দেনা করে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা যোগাড় করেন তিনি। এছাড়া সৌদি প্রবাসী স্বামীকে ফোন করে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক তিনি ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠান। সব মিলিয়ে ৬০ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করেন তিনি। তবে তাতে সন্তুষ্ট হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

যদিও হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, শিশুর মা এক টাকাও বিল দেননি। অন্যদিকে, পুলিশ বলছে বাচ্চা দুটির মা মাত্র চার হাজার টাকা বিল দিয়েছেন।

আয়েশা বেগমের ভাষ্যমতে, বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) হাসপাতালের আইসিইউ থেকে যমজ দুই শিশুকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে মারা যায় শিশু আহমেদ। আরেক শিশু আব্দুল্লাহও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.