পুরুষের বহুবিবাহের বিধান নিয়ে হাইকোর্টের রুল

স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিত না করে পুরুষের বহু বিবাহের বর্তমান প্রক্রিয়া সংবিধানের সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক নয়, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই বিষয়ে একটি পৃথক নীতিমালা কেন করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। মামলার বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব রুল জারি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান। রিটে আইন মন্ত্রণালয় সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিব এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়।

এর আগে ১৩ ডিসেম্বর বহুবিবাহের অনুমতি সংক্রান্ত মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটে বহুবিবাহের অনুমতি সংক্রান্ত মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণার আবেদন করা হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়, ইসলাম ধর্মে একজন স্ত্রী থাকা বস্থায় পুরুষের একাধিক বিয়ে করার বিধান রয়েছে। একসঙ্গে চার জন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি থাকলেও পবিত্র কোরআনে সব স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারায় বহুবিবাহের যে বিধান করা হয়েছিল তাতে সব স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত। যদিও স্বামীর বহুবিবাহের ফলে বর্তমান স্ত্রীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তারপরও সালিশি কাউন্সিলকে অনুমতি দেওয়ার সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা বর্তমানে স্ত্রীর সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে।

আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, মুসলিম পারিবারিক আইনের বিষয়ে পারিবারিক আদালত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখানে বহুবিবাহের মতো গুরুত্ববহ ইস্যু কেবল সালিশি কাউন্সিলের হাতে দেওয়া হয়েছে, যা নারীর মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।

উন্নত মুসলিম দেশগুলোতে বহুবিবাহের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, আর্থিক সক্ষমতার সনদ ইত্যাদি দাখিল করে এবং বর্তমান স্ত্রীর বক্তব্য শুনানি করে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। অথচ আমাদের দেশে সালিশি কাউন্সিলের সাক্ষ্য-প্রমাণ নেওয়ার আইনগত সুযোগ নেই। বহুবিবাহের বর্তমান যে বিধান রয়েছে তা সংশোধন করে আরও কঠোর বিধান করা উচিত। এ জন্য এই রিট দায়ের করা হয়েছে বলেও রিটকারী আইনজীবী জানান।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.