রেমিট্যান্সে প্রণোদনা আরও বাড়লো

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। যা আজ থেকেই কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনমানুষের সার্বিক জীবনমান উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বিবেচনায় বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধ উপায়ে দেশে প্রত্যাবাসন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রেমিট্যান্স পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ জন্য সরকার ২ শতাংশ প্রণোদনা/নগদ সহায়তা দেওয়ার বিদ্যমান হার বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্ধিত এ হার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

সরকার ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রথমবারের মতো ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। সরকারের এ নীতিসহায়তার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আহরিত রেমিট্যান্সের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের আহরিত রেমিট্যান্সের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি।

রেমিট্যান্সে সরকারি প্রণোদনার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নববর্ষের উপহার।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন বছরে প্রবাসীদের জন্য সুখবর দেয়া হয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা বিদ্যমান ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে।

‘এর ফলে আশা করছি, প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আরও উৎসাহিত হবে। সামনে যে দুইটি ঈদ আছে তখন রেমিটেন্স বেশি আসবে। গতবছর রেমিটেন্স ২৫ বিলিয়ন ডলার এসেছে। এ বছর ২৬ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার জন্য প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলাম, তখন জরিপ করে দেখেছি মোট রেমিট্যান্সের ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধপথে, তথা হুন্ডির মাধ্যমে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসা উৎসাহিত করতে প্রণোদনা দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’

তিনি জানান, বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসলে অর্থনীতি গতিশীল হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়। এরপর থেকে রেমিট্যান্স ১৪ বিলিয়ন থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫ বিলিয়ন ডলার। এ বছর ২৬ বিলিয়ন ডলার আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.