এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের হাতে সময় নিয়ে বের হতে অনুরোধ

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যথেষ্ট সময় হাতে রেখে কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কেউ পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়লে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করতে পারেন। পুলিশ পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবে।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদের সামনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে পুলিশের প্রস্তুতি সম্পর্কে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে ডিএমপি। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বাংলাদেশে আসবেন। সে কারণে রাজধানীতে বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বলেন, মহান বিজয় দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ইনটেলিজেন্স নির্ভর পুলিশ, এপিবিএন, এসএসএফ, পিজিআরের সমন্বয়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি ভেন্যু এসবি, এসএসএফ, র‌্যাব ও ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে।

তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সংসদ ভবনের আশপাশ এলাকার প্রত‌্যেকটি বহুতল ভবনে পোশাকে ও সাদা পোশাকে নিযুক্ত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আমন্ত্রিত অতিথিদের নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়েছে তা কঠোরভাবে পালন করা হবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে গত এক সপ্তাহ ধরে যতগুলো ভেন্যু আছে, সবগুলোর আশপাশে সন্দেহভাজন আবাসিক হোটেল, বহুতল ভবন, মেস, বাসাবাড়িতে ব্লক রেইড করছি। যাতে করে আমাদের নিরাপত্তাবলয়ের মধ্যে আগে থেকেই কোনো অপরাধী ঢুকে থাকতে না পারে। বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াট ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।

কমিশনার বলেন, বিজয় উৎসব ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, ভারতের রাষ্ট্রপতি অংশ নেবেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু ভবন, সংসদ ভবন চত্বরে মূলত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে প্যারেড হবে এবার আরও বর্ণিল ও জ্যাকজমকপূর্ণ। আমন্ত্রিত দেশি-বিদেশি ভিভিআইপি, ভিআইপি যেসব রুটে চলাচল করবে সেসব রুটে প্রটেকশনের পাশাপাশি, রুফটপ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সংসদ ভবন এলাকার আশপাশে যতগুলো ভবন আছে সেখানে প্রত্যেক ফ্লোরে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। সংসদ ভবন এলাকায় ডাইভারসন করা হবে। সেটির প্ল‌্যান আমরা জানিয় দেবো। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রতিটি ভেন্যুতেই আমন্ত্রিত অতিথিরা যানবাহন ব্যবহার করে আসবেন। চারদিক থেকে যানবাহন আসবে। তাদের যানবাহন পার্ক করতে আমাদের বেগ পেতে হবে৷ তাই ভেন্যুর আশপাশে যানজট তৈরির সম্ভাবনা আছে। তাই আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রতি অনুরোধ থাকবে সময় নিয়ে আসার জন্য। প্যারেড স্কোয়ারে বিদোশি অতিথিরা অংশ নেবেন। সেখানেও আমাদের আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এবারও সাধারণ দর্শকদের জন্য প্যারেড স্কোয়ারের ৩, ৪, ৫, ১৪, ১৫ ও ১৬ নং গেট খোলা থাকবে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন করা হবে। আর প্রত্যেককেই তল্লাশির মধ্য দিয়ে ঢুকতে হবে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় রোড প্ল‌্যানের ম্যাপ বিল বোর্ডের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হবে। যাতে করে কেউ না বুঝে হয়রানির মুখে না পড়েন। আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রত্যেককে ধৈর্যসহকারে বিরক্ত না হয়ে অংশ নেওয়ার অনুরোধ, কারণ আমাদের নিরাপত্তা আপনাদের জন্যই।

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা গ্রহণের নেপথ্যে কোনো হুমকি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এবারের অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার বিশেষত্ব হলো, অন্যান্য অনুষ্ঠানে ইউনিফর্ম পুলিশভিত্তিক, তবে এখানে পুরোটাই ইনটেলিজেন্স নির্ভর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিটা কর্নারে আমাদের গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ করছে৷ যাতে ন্যুনতম কোনো ব্যত্যয় না ঘটে স্পেসিফিক কোনো হুমকি নেই। গ্লোবাল সিচুয়েশন ও দেশীয় অভ‌্যন্তরীণ বিভিন্ন ইস্যু মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.