রাজস্ব আদায় একলাখ কোটি টাকা ছাড়ালো

রাজস্ব আদায়ে গতি পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব থেকে বেরিয়ে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রাজস্ব আদায়ে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এই সময়ে এনবিআর এক লাখ ২৬৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এনবিআরের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৮৭ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার ১৩ হাজার ৭৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করেছে এনবিআর।

অবশ্য ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩ হাজার ৯৮ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে। এ সময়ে এনবিআরকে এক লাখ ১৩ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা আদায়ের জন্য বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ অর্জনের হার ৮৮.৪৫ শতাংশ।

এদিকে সরকারের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য অর্জন করতে হলে এনবিআরকে আগামী ৭ মাসে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম পাঁচ মাসে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক বিভাগ মিলিয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। করোনার প্রভাব স্তিমিত হয়ে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি বাড়ার পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার, করনেট বৃদ্ধি ও অটোমেশনের কারণে রাজস্ব আদায়ে এমন গতি এসেছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে আমদানি-রফতানি শুল্ক খাত থেকে। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২.৫৬ শতাংশ। অর্থাৎ আমদানি-রফতানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্ব আদায় বেড়েছে। আমদানি-রফতানির শুল্ক খাত থেকে আদায় হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৬৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার ৮৭.৬৪ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।

এনবিআরের সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) আয়কর থেকে ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অর্থাৎ আয়কর থেকে আদায় হয়েছে ২৯ হাজার ৬৯৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯১.৭৪ শতাংশ।

অপরদিকে, ভ্যাটে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ৬০৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা আদায় হয়েছে; যা লক্ষ্যমাত্রার ৮৬.৬৬ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে এক লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে পাওয়ার আশা এক লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা এবং আমদানি শুল্ক থেকে পাওয়ার আশা ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.