খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিলে প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত হবেন: এমপি হারুন

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, উনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক যে অবস্থা ওনাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার অনুমতি দিতে অসুবিধা কোথায়? আপনি তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগটি দিন। এতে আপনি সম্মানিত হবেন। দেশের মানুষ আপনাকে অবশ্যই সম্মান করবে।

পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়নি বলেও মন্তব্য করেন হারুনুর রশিদ। তিনি বলেন, আমাদের একপক্ষের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে অন্যপক্ষ জয়ী হয়েছে। আর ভবিষ্যতে কী হবে আমি বলতে পারবো না। সত্যিকার অর্থে আজকে জাতি একটা গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে। অবশ্যই রাজনীতি চর্চায় আমাদের ফিরে আসতে হবে। বিরোধী দলকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।

হারুন বলেন, উচ্চশিক্ষাঙ্গন থেকে ডাক্তার হয়, ইঞ্জিনিয়ার তৈরি হচ্ছে কিন্তু রাজনীতিক তৈরি হচ্ছে না। কারণ সেখানে রাজনীতি নাই, রাজনীতির চর্চা নেই।

তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান জাতীয় সংসদ, আমরা এখানে সরকারি দল, বিরোধী দল একাকার হয়ে গেছি। আমাদের পাশে বিরোধী দলের সদস্যরা রয়েছেন। উনারাই বলছেন, আমরা কাগজে-কলমে বিরোধী দল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যেখানে লাঙ্গল ছিল সেখানে নৌকা নাই। যেখানে নৌকা ছিল সেখানে লাঙ্গল নাই। তাদের দায়বদ্ধতা আছে। সত্যিকার অর্থে জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এই সংসদ সেটি ঘটাতে পারছে না।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক-প্রশাসনিক সর্বস্তরে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়। আশঙ্কাজনকভাবে দুর্নীতির ভয়াবহ বিস্তার। শিক্ষা ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস, বিভিন্ন নিয়োগে প্রশ্নপত্র ফাঁস। এমসিকিউ পদ্ধতির মাধ্যমে জ্ঞানশূন্য প্রজন্মের বিস্তৃতি শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেউলিয়া থেকে আরও দেউলিয়ার দিকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি। জাতি হিসেবে আমরা সব দিক থেকেই যেন একটা ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে হারুনুর রশীদ বলেন, আজ বিনাভোটে নির্বাচন কমিশন যাদেরকে নির্বাচিত ঘোষণা করছে তাদের আমি কী বলবো? অ-নির্বাচিত বলবো? না নির্বাচিত বলবো? তারা তো নিশ্চয়ই বিনাভোটে নির্বাচিত। এই সংবিধান আমাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলে দিচ্ছে ১১ অনুচ্ছেদে যে যারা সেখানে ভোটার তাদের মাধ্যমে নির্বাচিত করতে হবে স্থানীয় প্রতিনিধিদের। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমরা ব্যর্থ। গণমাধ্যমে যে তথ্য এসেছে ৩ থেকে ৪শ’র অধিক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ও গোটা পরিষদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। তাদের কে নির্বাচিত করলো? কে তাদেরকে মনোনীত করলো? তারা কীভাবে জনগণের দায়িত্ব পালন করবে?

বিএনপি দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র পথ, এটি আমরা বিশ্বাস করি। অবশ্যই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু আজকে আমাদের এই ক্ষেত্রে বড় ধরণের ঘাটতি তৈরি হয়ে গেছে। আমাদের গণতন্ত্রের সঙ্কট, আমাদের আইনের সুশাসনের সঙ্কট, আমাদের মাদকের যে ভয়াবহ বিস্তার ঘটছে এই সমস্ত সঙ্কট থেকে জাতিকে মুক্ত করতে গেলে অবশ্যই জাতীয় ঐক্যমতের দরকার।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.