তিন মামলায় ফটোসাংবাদিক কাজলের বিচার শুরু

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর, কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া পৃথক তিন মামলায় ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এই তিন মামলায় শুরু হলো আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ।

সোমবার (৮ নভেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। আজ তিন মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এজন্য জামিনে থাকা আসামি ফটোসাংবাদিক কাজল আদালতে উপস্থিত হন। এরপর নির্দোষ দাবি করে তিন মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন আসামি কাজল। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন।

গত ৭ সেপ্টেম্বর শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলায় সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে এ মামলার দায় থেকে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩১ জনকে অব্যাহতি দেন। এছাড়া গত ৮ সেপ্টেম্বর কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া আরেক মামলায় কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত।

২০২০ সালের ৯ মার্চ মাগুরা-১ আসনের এমপি মো. সাইফুজ্জামান শিখর বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৬/২৯/৩১ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে গত ৮ এপ্রিল এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। গত বছরের ১১ মার্চ সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১৪ মার্চ আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাসেল মোল্লা এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এর আগে ১০ মার্চ হাজারীবাগ থানায় মামলা করেন ওসমান আরা বেলী। ওই মামলার তদন্ত শেষে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ

গত বছরের ১০ মার্চ বকশিবাজারের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন কাজল। পরদিন কাজলের স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী চকবাজার থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ১৮ মার্চ কাজলের সন্ধান চেয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন তাঁদের ছেলে মনোরম পলক। প্রায় দুই মাস পর গত বছরের ২ মে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে কাজলকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় বিজিবি। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়। যশোর থেকে ঢাকায় আনার পর গত বছরের ২৩ জুন শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় কাজলকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেখানো হয়। পরে হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানার মামলায়ও তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পুলিশ তাঁকে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করে।

গত বছরের ২৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত কাজলের জামিন আবেদন নাকচ করলে তিনি ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনে গত ২৪ নভেম্বর এবং এরপর ১২ ডিসেম্বর তিন মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি। সাত মাস কারাগারে থাকার পর ২৫ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান এই ফটোসাংবাদিক।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.