ওয়াইফাই সংযোগ পাবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন পাঠদান এখন নিয়মিত কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে। এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ইন্টারনেট সুবিধা। এ অবস্থায় শিক্ষকদের চাহিদার কথা চিন্তা করে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াইফাই সুবিধা দেবে সরকার। মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সব বিদ্যালয়ে চলবে ইন্টারনেট ব্যবস্থা। এ ছাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় এটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকের প্রতিটি বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষককে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। ওয়াইফাই থেকে মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে শিক্ষকরা অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম চালাতে পারবেন। সরকারের অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমকে মাথায় রেখেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এম মনছুরুল আলম বলেন, অনলাইনে ক্লাসের সুবিধার্থে এমন উদ্যোগ। বর্তমান ডিজিটাল সময়ে এসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন সুবিধার আওতায় আনা জরুরি। তাছাড়া অনলাইন ক্লাসের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। শিগগিরই দেশের ৬৫ হাজার ৯৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ওয়াইফাইয়ের আওতায় নেওয়া হবে। বাদ যাবে না মনপুরা থেকে লংগদুর কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ওয়াইফাই পরিচালনার খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘ডাটা ফি দেওয়া হবে। শিক্ষকরা তাদের স্মার্ট ফোন ব্যবহার করবেন। স্মার্ট ফোন থাকলে রাউটার বা অন্য কোনও ডিভাইস ছাড়াই সেবা গ্রহণ করা সম্ভব।’

এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সিনিয়র সিস্টেম অ‌্যানালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান বলেন, আমরা আইসিটি বিভাগের সমন্বয়ে কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ওয়াইফাই সংযোগ দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। চরাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। এখন সেগুলো নিয়েও কাজ চলছে। আশা করছি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় সব প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটের আওতায় আসবে।

এর আগে গত এপ্রিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুগল মিটের মাধ্যমে ক্লাস করানোর নির্দেশ দেয় সরকার। নির্দেশনায় বলা হয়, প্রতিটি ক্লাস্টারে একটি করে আইসিটি পুল গঠন করা হবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার। ক্লাস্টারের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইতোমধ্যে যারা গুগল মিটে কাজ করেছেন তারা আইসিটি পুলের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। কোনো ক্লাস্টারের কোনো শিক্ষকের গুগল মিট অরিয়েন্টেশন না হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষককে অরিয়েন্টশন দিতে হবে। আইসিটি পুলের সদস্য শিক্ষকদের যত বেশি সম্ভব একদিনের অরিয়েন্টশন দিতে হবে।

আইসিটি পুলের সদস্য ও অরিয়েন্টেশন নেওয়া শিক্ষকরা অভিভাবকদের মধ্যে যাদের স্মার্ট ফোন বা ডিভাইস আছে, তাদের গুগল মিট অরিয়েন্টেশন দেবেন। জেলা শিক্ষা অফিসার, পিটিআই সুপারিন্টেনডেন্ট, পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর (কম্পিউটার সায়েন্স), উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে একটি কমিটি থাকবে। এই কমিটি অনলাইন ক্লাস বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে। বিভাগীয় উপ-পরিচালক সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন।

প্রসঙ্গত, দেশে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৯৯টি। এর মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একযোগে জাতীয় করা প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩৭ হাজার ৬৭২টি। বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে এক হাজার ২০৭টি। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দফায় নতুন করে জাতীয়করণ করেছেন ২৬ হাজার ১৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় রয়েছে ৬১টি।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.