অবশেষে মুক্তি পেলেন কানাডায় আটক হুয়াওয়ে কর্মকর্তা

দীর্ঘ কূটনৈতিক টানাপোড়েন শেষে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন কানাডায় আটক থাকা চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা (সিএফও) মেং ওয়ানঝু। যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতার পর তিন বছর পর মুক্তি পেলেন তিনি। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কানাডার আদালত তাকে মুক্তির নির্দেশ দেয়।

মার্কিন বিচার বিভাগের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতায় মামলার বিচার প্রক্রিয়া মুলতবি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেং ওয়ানঝুর বিরুদ্ধে মামলা মুলতবি থাকবে এবং যদি তিনি আদালত প্রদত্ত শর্তাবলী মেনে চলেন, তাহলে শেষ পর্যন্ত মামলাটি বাতিল হয়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, স্কাইকম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইরানের টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করছে হুয়াওয়ে। এতে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেওয়া নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘিত হয়েছে।

মেং ওয়ানঝু ভ্যাংকুভারের একটি আদালতে উপস্থিত হওয়ার পর কানাডিয়ান প্রসিকিউটররা আদালতকে বলেন, তারা তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের প্রচেষ্টা প্রত্যাহার করেছে এবং তার মুক্তি দেওয়া উচিত। এরপর বিচারক তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন।

একই সঙ্গে চীনে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক থাকা দুজন কানাডিয়ান নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তারাও এখন কানাডার পথে রয়েছেন।

মেং ওয়ানঝু হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন জেনফেং-এর মেয়ে। জেনফেং ১৯৮৭ সালে হুয়াওয়ে প্রতিষ্ঠা করেন। কোম্পানিটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিকম প্রযুক্তি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান।

প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের পর তাকে আটক করেছিল কানাডা। শুক্রবার তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ প্রত্যাহার করে নেয় মার্কিন বিচার বিভাগ।

এই মামলার কারণে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। এরপর অভিযোগ ওঠে, পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কানাডার নাগরিকদের আটক করেছে চীন, যদিও দেশটি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

কানাডার আটকাবস্থা থেকে মুক্তির পর সাংবাদিকদের মেং ওয়ানঝু, ‘আমার জীবন পুরোপুরি ওলটপালট হয়ে গেছে। এটা আমার জন্য একটা বিপর্যয়কর সময় ছিল।’

এএফপি জানিয়েছে, মুক্তির পরপরই তিনি চীনের শেনজেনগামী এয়ার চায়নার একটি বিমানে কানাডা ছেড়ে যান।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে জালিয়াতির অভিযোগে মেং ওয়ানঝুকে ভ্যাংকুভার বিমানবন্দর থেকে আটক করে কানাডা। এরপর থেকে তিনি তিন বছর ধরে কঠোর নজরদারির মধ্যে তার ভ্যাংকুভারের বাড়িতে গৃহবন্দী ছিলেন।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.