ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীরা আবেগে সহিংসতা ঘটিয়েছেন: ইসি সচিব

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, আজকে যে ঘটনা (নিহত-আহত) ঘটেছে, এর কারণ প্রার্থীরা খুব বেশি ইমোশনাল।

তিনি বলেন, একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, ইউপি নির্বাচন কিন্তু একেবারে রুট পর্যায়ে হয়। নির্বাচনী আমেজ থাকে। প্রার্থীরা এত ইমোশনাল হয়ে যান, যে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এসব করতে যেয়ে নিজেদের মধ্যে অকস্মাৎ তারা নিজেদের মধ্যে ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেন। এটি ঘটে এবং ঘটেছে।

আজ সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ১৬০ ইউপি ও ৯টি পৌরসভার ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ নির্বাচনকে ঘিরে রোববার রাতে এক বৃদ্ধা ও সোমবার দুজন নিহত হন। ১১টি ইউপি ও ৯টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ভোটের সার্বিক অবস্থা নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে আসেন ইসি সচিব।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন আজকে ১৬০টি ইউপি ও ৯টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে। এখন গণনা চলছে।

ভোটে হতাহতদের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, আপনারা জানেন এটি আমাদের জন্য খুব বেদনাদায়ক, দুঃখজনক ঘটনা যে মহেশখালী এবং কুতুবদিয়ায় দুজন নিহত হয়েছেন। ২৪ জন লোক বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের নিজেদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আহত হয়েছেন। এছাড়া মোটামুটি সব জায়গায় আমরা যতটুকু খবর পেয়েছি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন পাঁচটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের কারণে ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। ইভিএমে ইউনিয়নে ৫০ শতাংশ এবং পৌরসভায় ৫০ শতাংশে বেশি ভোট পড়েছে। আর ব্যালটে ৬৫ শতাংশের হবে বলে আশা করি।

হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, গতকাল রাতে যেটা হয়েছে, প্রার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের ফলে একজন বৃদ্ধ মহিলা কোনোভাবে ধাক্কা খেয়ে নিহত হয়েছেন বলে আমরা জেনেছি। এটি তদন্ত করে দেখার জন্য বলেছি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, সহিংসতা তখনই বন্ধ হবে, আমাদের প্রার্থী যারা তারা তো খুব বেশি ইমোশনাল হয়ে যায়। খুব বেশি ইমোশনাল হয়ে যায়। যেমন যে তিনটি ঘটনার কথা আপনারা জেনেছেন, সেটি তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে হয়ে মহেশখালীতে এই ঘটনাটি ঘটেছে। আর কুতুবদিয়ায় যেটা… আমাদের প্রিজাইডিং অফিসারের কাছ থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিতে গিয়েছে, সেখানে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রিজাইডিং অফিসারের নির্দেশে গুলি করেছে। এটি তো করতেই হবে।

তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে কিন্তু দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এলাকার সব মানুষ অংশগ্রহণ করে। তারা খুব বেশি ইমোশনাল হয়ে যায়। তখনই এই দ্বন্দ্বগুলো হয়ে যায়।

সচিব বলেন, আমরা যা দেখলাম, যে ঘটনা ঘটেছে সেগুলো খতিয়ে দেখব। ভবিষ্যতে যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকব।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে তা বলব না। কেউ ভোটে অংশ না নিলে, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় সব নিয়ম না মানলে কিংবা কেউ প্রার্থিতা তুলে নিলেও অন্য একজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবে।

ভোট বর্জনের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, কেউ কারচুপির কোনো অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে করে থাকলে, তাহলে তিনি ব্যবস্থা নেবে। তবে সেটা সেই সময়ই করতে হবে। আমরা যে তথ্য পেয়েছি তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.