পাপুলকাণ্ডে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ

সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততায় এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।

এ বিষয়ে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হয়ে তিনি বেশ কিছু নথিপত্র ও বক্তব্য দিয়েছেন। তবে দুদক তার কাছে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আরও কিছু নথিপত্র চেয়েছে। যা পরে সরবরাহ করবেন বলে দুদককে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।

একই অভিযোগে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজুকে তলব করা হলেও তিনি হাজির হননি।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ চার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক।

কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এক সময়ে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। সেই সূত্র ধরেই তাদেরকে তলব করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আগামীকাল সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটির পরিচালক মো. আদনান ইমাম ও একে মোস্তাফিজুর রহমানের দুদুক কার্যালয়ে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে।

২০২০ সালের ১১ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ১৪৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধানের পাঁচটি হিসাবের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত লন্ডারিং হয় ১৪৮ কোটি টাকা। অথচ মাত্র ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজের কোনো আয়ের উৎস নেই।

২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর আদালতের অনুমতি নিয়ে কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী সাংসদ সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা অবরুদ্ধ করতে চিঠি দেয় দুদক।

ওই চিঠিতে পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের নামে থাকা হিসাবের বিষয়ে আটটি ব্যাংকের এমডিকে নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। এছাড়া তাদের নামে থাকা দেশের বিভিন্ন স্থানের মোট ৩০ দশমিক ২৭ একর জমি ও গুলশানের ফ্ল্যাট অ্যাটাচমেন্টের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

অন্যদিকে, এফডিআর হিসাবের দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার কোনো উৎস শ্যালিকা জেসমিন দেখাতে পারেননি, যে কারণে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

অর্থ ও মানব পাচারের মামলায় গত ২৮ জানুয়ারি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের আদালত। পাশাপাশি তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল বা ৫৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.