বঙ্গবন্ধুর পছন্দের জায়গা ছিলো কক্সবাজার: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পছন্দের জায়গা ছিল কক্সবাজার। তিনি বেশি সময় জেলেই থাকতেন। জেল থেকে বের হয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার ছুটে যেতেন। সে সময় বাবার সঙ্গে কক্সবাজারের নানা জায়গায় ঘোরাঘুরির স্মৃতিচারণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

রোববার (২৯ আগস্ট) বেলা সোয়া ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ১৯৯৬ সালের পরের সরকার বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করত। যার কারণে কক্সবাজারকে ঘিরে তারা কিছুই করেনি। বরং তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। সেখান থেকে নতুন করে কক্সবাজারকে ঘিরে পরিকল্পনা হাতে নেই। আস্তে আস্তে সবই দৃশ্যমান হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সেখানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সবচেয়ে বড় রানওয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। কক্সবাজার পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে বিদেশিদের জন্য আলাদা জোন গড়ে তোলা হবে। তারা সেখানে তাদের মতো করে উপভোগ করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারকে ঘিরে সরকারের আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। সিঙ্গাপুর, ব্যাংককের আদলে সাজানো হবে কক্সবাজারকে। ইকোট্যুরিজমের কাজ চলমান রয়েছে, রেললাইনও আসছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলে দিন-রাত ফ্লাইট চলবে। এসব দৃশ্যমান হলেই কক্সবাজার বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভবিষ্যতে কক্সবাজার হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যাতায়াতকারী বিমানগুলো কক্সবাজার থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করবে বলে জানান তিনি।

কক্সবাজারকে আধুনিক পর্যটন শহর করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়ক। এটিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। রেললাইনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও পৌঁছে গেছে। এসব পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে কক্সবাজার- যেমনটা জাতির পিতা চেয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা জানান, আওয়ামী লীগ ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে যে ইশতেহার ঘোষণা করেছিল সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। এখন যত উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে সবই তাদের দলীয় ইশতেহারে ছিল।

এ সময় তিনি বিগত সরকারগুলোর সমালোচনা করে জানান, ১৯৯৬ সালের আগে ২১ বছর দেশে সত্যিকারের কোনো উন্নতি হয়নি। জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া কেউই দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতেন না, এজন্য তখন দেশের উন্নতি হয়নি বলেও মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানায়, বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে নয় হাজার ফুট দীর্ঘ একটি রানওয়ে রয়েছে। এটি ১০ হাজার ৭০০ ফুটে উন্নীত করার কাজ চলছে। এর মধ্যে এক হাজার ৩০০ ফুট থাকবে সমুদ্রের মধ্যে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের মহেশখালী চ্যানেলের দিকে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সম্প্রসারিত হচ্ছে এই রানওয়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নতুন প্রজন্মের উড়োজাহাজ বোয়িং-৭৭৭-৩০০ ইআর, ৭৪৭-৪০০ ও এয়ারবাসের মতো উড়োজাহাজ সহজেই ওঠানামা করতে পারবে। প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যার পুরোটাই অর্থায়ন করছে বেবিচক।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.