বরিশালে সংঘর্ষ, জামিনপ্রাপ্তদের আসামিদের আনন্দ মিছিল

বরিশালে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ইউএনও এবং পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের ৯ নেতাকর্মী কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তিপ্রাপ্তদের নিয়ে নগরীতে মোটর শোভাযাত্রা ও আনন্দ মিছিলও হয়েছে।

বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকাল সোয়া ৫টার দিকে কারাগার থেকে মুক্ত হন তারা। জেল গেটে আগেই থেকেই তাদের মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তারা বের হওয়ার পর উপস্থিতি নেতাকর্মীরা তাদের স্বাগত জানিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। পরে কারাফটক থেকে মিছিল সহকারে কালীবাড়ী রোড়স্থ সেরনিয়াবাত ভবনে পৌঁছান তারা। এ সময় গোটা এলাকা ‘বরিশালের মাটি সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ঘাঁটি’, ‘সাদিক ভাই ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’- ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।

এর আগে, দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশালের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহর আদালতে তাদের জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত ৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেন। এ দুই মামলায় কারাগারে থাকা বাকি আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী তালুকদার মো. ইউনুস জানান, বাকিদের জন্য পরে আবার জামিনের আবেদন করা হবে।

বুধবার ইউএনও মুনিবুর রহমানের দায়ের করা মামলায় যে ১৩ জনের জামিন আবেদন করা হয় তারা হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. ওলিউল্লাহ, রূপাতলী বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শাহরিয়ার বাবু, মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ, লিটন ঘোষ, রাকিব, মো. শুভ হাওলাদার, শুভ সাহা, ইখতিয়ার উদ্দিন, আব্দুস সালাম মনু, শাহীনুর ইসলাম শাহীন, হারুনর রশিদ এবং আলো গাজী।

পুলিশের দায়ের করা মামলায় যে ২১ জনের জামিন আবেদন করা হয় তারা হলেন- বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাইদ আহম্মেদ মান্না, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. ওলি উল্লাহ, রূপাতলী বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শাহরিয়ার বাবু, মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ, লিটন ঘোষ, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মো. শুভ হাওলাদার, শুভ সাহা, ইখতিয়ার উদ্দিন, আব্দুস সালাম মনু, শাহীনুর ইসলাম শাহীন, হারুনর রশিদ, মো. মমিন উদ্দিন কালু, মো. কবির তালুকদার, মো. হুমায়ুন হাওলাদার, ইলিয়াস, জমির উদ্দীন, মো. মিরাজ গাজী, আলো গাজী ও মো. নাসির উদ্দিন শরীফ।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ আগস্ট (বুধবার) রাতে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ১৯ আগস্ট রাতে ইউএনও মুনিবুর রহমান ও পুলিশ বাদী হয়ে দুইটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২২ আগস্ট মেয়র, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টিকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উভয় পক্ষ মেনে নেওয়ায় সবার মুখে হাসি ফোটে। তবে এ বৈঠকে ইউএনও উপস্থিত ছিলেন না। তবে ঠিক কেমন সমঝোতা হয়েছে এবং ঘটনার পর পাল্টাপাল্টি মামলাগুলোর পরিণতি কী হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি।

যদিও প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে সংকট তৈরি হয়েছে তা আইনি প্রক্রিয়াই নিষ্পত্তি হবে। সে প্রক্রিয়াটি কি? তাও তখন স্পষ্ট করা হয়নি। তখন বলা হয়েছিল, যেহেতু মামলা দায়ের হয়েছে তা হুট করে তুলে নেয়ার সুযোগ নেই। তুলে নেয়া হলে তা মানুষের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দেবে। তাই মামলাগুলো প্রক্রিয়া অনুযায়ী নিষ্পত্তি হবে। সেক্ষেত্রে হয়তো দু’পক্ষই নমনীয় অবস্থানে থাকবেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.