মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণার বাস্তবায়ন মনিটর করতে ডিএসইকে নির্দেশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোনো কোম্পানি মাঝে মধ্যেই এমন মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের (Price Sensitive Information-PSI) ঘোষণা দেয়, যেগুলো তারা পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করে না। বিশেষ করে বাজার যখন চাঙা থাকে, তখন এমন ঘোষণার প্রবণতা বেড়ে যায়। অভিযোগ আছে, শেয়ারের মূল্য কারসাজির অংশ হিসেবে ভূয়া মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণা দেওয়া হয়ে থাকে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এসব তথ্যে বিশ্বাস রেখে বিনিয়োগ করে ক্ষতির মুখে পড়েন।

কাগুজে পিএসই ঘোষণার প্রবণতা বন্ধে এখন থেকে কোম্পানিগুলোর পিএসআই এর বাস্তবায়ন মনিটর করবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পিএসআই এর বাস্তবায়ন মনিটর করতে ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে।

আজ রোববার (২২ আগস্ট) ডিএসইর সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। বিএসইসিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং সার্ভিল্যান্স বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডিএসইর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভুঁইয়া এবং সাভিল্যান্স বিভাগের সদস্যরা।

বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি কোনো কোম্পানি মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণার বাস্তবায়ন না করে, তাহলে ডিএসই তা বিএসইসিকে জানাবে। বিএসইসি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এর ফলে বাজারে ভুয়া মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণা দেওয়ার প্রবণতা কমবে। এই বিষয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা বাড়বে।

বৈঠকে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর ফ্রি ফ্লোট (Free Float) শেয়ার সংখ্যা বাড়ানোর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বাজারে এসব কোম্পানির ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বাড়লে শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা অনেকটা-ই কমে আসবে বলে মনে করছে বিএসইসি।

এছাড়া স্বল্প মূলধনী কোম্পানি, বিশেষ করে লভ্যাংশ না দেওয়া, উৎপাদনে না থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়মিত মনিটর করতে বিএসইসি ও ডিএসইর সার্ভিল্যান্স বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ওয়েবসাইট নিয়েও আলোচনা হয় আজকের বৈঠকে। তালিকাভুক্ত বেশ কয়েকটি কোম্পানির ওয়েবসাইট নেই; অন্যদিকে ওয়েবসাইট যাদের আছে, তাদের বড় অংশই তথ্য হালনাগাদ করে না। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এ কারণে তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত প্রায়শ ভুল হয়।

এছাড়াও বিএসইসি আজ ডিএসইকে সব সদস্য প্রতিষ্ঠানে (ব্রোকারহাউজ) অভিন্ন ব্যাক-অফিস সফটওয়্যার চালুর বিষয় নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। বিএসইসি বলেছে, বেশ কিছু ব্রোকারহাউজে গ্রাহকদের সম্মিলিত অ্যাকাউন্টের টাকা ডিলার অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেওয়ার বা অন্য কাজে লাগানোর অভিযোগ আছে। এই প্রবণতা বাজারের জন্য বিপজ্জনক। তাই ব্রোকারহাউজগুলোতে অভিন্ন ব্যাপক অফিস সফটওয়্যার চালু করতে হবে। আর তার মাস্টার পাসওয়ার্ড রাখতে হবে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে, যাতে ব্রোকারহাউজগুলো এই সফটওয়্যারের তথ্য ইচ্ছামত পরিবর্তন করতে না পারে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.