রিজভীর আরও একটু বিশ্রাম ও চিকিৎসা দরকার: তথ্যমন্ত্রী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর আরও চিকিৎসা ও বিশ্রাম দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন, এজন্য স্বস্তি প্রকাশ করছি। কিন্তু তার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে তিনি এখনো পুরাপুরি সুস্থ হননি, তার আরও একটু বিশ্রাম দরকার, আরও একটু চিকিৎসা দরকার।

আজ বুধবার (১১ আগস্ট) সচিবালয়ের তথ্য অধিদফতরে অনুষ্ঠিত চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনী পর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন। গণহারে টিকা প্রয়োগ নিয়ে রুহুল কবীর রিজভীর বক্তব্য প্রসঙ্গে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রিজভী আহমেদ অসুস্থ ছিলেন, ওনার বক্তব্য আমরা অনেক দিন মিস করছিলাম। আমি খোঁজ-খবর নিয়েছিলাম। বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পেলাম অসুস্থ থাকায় তাকে দেখা যাচ্ছে না। তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন এবং বক্তব্য দিচ্ছেন, এজন্য স্বস্তি প্রকাশ করছি। তার বক্তব্যে মনে হচ্ছে তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি, তার আরও একটু বিশ্রাম দরকার, আরও একটু চিকিৎসা দরকার।

তিনি বলেন, তিনি (রিজভী) গতকাল যে বক্তব্য রেখেছেন, যেভাবে রেখেছেন এটি আসলে সুস্থতার লক্ষণ নয়, আরও সুচিকিৎসার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। ড্যাবের ডাক্তাররা চিকিৎসা করতে পারেন। দরকার হলে আমরাও সহায়তা করতে পারি।

করোনা টিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এই টিকা নিয়ে প্রথম থেকে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। এই টিকাদান ও টিকা গ্রহণ জনস্বার্থের কাজ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত কোনো টিকা নিয়ে যদি বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় তাহলে তা অবশ্যই জনস্বার্থবিরোধী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা নিয়ে কথা বলেছেন, এজন্য ওই টিকা না নিয়ে মর্ডানার টিকা নিয়েছেন। তিনি হাত মাথার পেছন দিয়ে ঘুরিয়ে এনে খেয়েছেন। এই টিকাও সরকার সংগ্রহ করেছে। সরকারের টিকা কার্যক্রম নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা তাদের প্রথম থেকেই ছিল। তাদের শীর্ষ নেতাদের বহুজন এই টিকা নিয়েছেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, গবেষক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অনেক বেশি ভালো এবং কার্যকর। যা ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করেছে। বলা হয় ৯২ শতাংশ কার্যকর। ভারতের ১০ কোটি মানুষকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে এবং তাদের দেশে করোনা সংক্রমণ ১ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।

যারা দেশটাই চায়নি তারা এখন বাংলাদেশে আস্ফালন করে, রাজনীতি করে উল্লেখ করে ড. হাসান মাহমুদ বলেন, এদের পৃষ্ঠপোষকতা করে বিএনপি। আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা বিরুদ্ধাচারণ করেছেন, শুধু তাই নয় মুক্তিকামী মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছেন তারা এখন রাজনীতি করেন, আর তাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। জামায়াতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ করেছিলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অনুমতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ইতিহাসকে সঠিক তথ্যনির্ভর করার জন্য জিয়াউর রহমানসহ যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের কুশীলব ছিলেন তাদের মুখোশ উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন, এটি আজ সময়ের দাবি। অন্যথায় ইতিহাসের সঠিক তথ্য সন্নিবেশিত হবে না, ইতিহাসের দায়টা আমরা এড়াতে পারব না।

সচিবালয়ের আলোকচিত্র প্রদর্শনীর বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রদর্শনীতে যে সব আলোকচিত্র নিয়ে আসা হয়েছে- এ আলোকচিত্রগুলো সম্পর্কে সবাই জানে না। সবার দেখার সুযোগ হয় না। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও প্রচুর মানুষ আসে তারাও এ প্রদর্শনী দেখতে পাবেন।

তিনি বলেন, দেশে সাত কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। তাদের কাছে পৌঁছাতে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রদর্শন করা হবে। এটি খুব ভালো উদ্যোগ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই রাষ্ট্র রচনা করে গেছেন। বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটেছে দুই হাজার বছর আগে। যদিও এ নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। সুতরাং বাঙালি জাতিসত্তা উন্মেষের পর অনেক বাঙালি রাজা থাকলেও স্বাধীন ছিল না। বঙ্গবন্ধু ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.