‘হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যায় না’

সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি বিদ্বেষপ্রসূত মিথ্যাচার করছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি করোনা সংকটে জনগণের পাশে আছে‑ এ কথা পাগলেও বিশ্বাস করে না।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মাঠে থেকে জনমানুষের পাশে রয়েছে, অন্যদিকে বিএনপি গৃহকোণে অবস্থান করছে। এ করোনাকালে বিএনপিকে হাজার পাওয়ারের বাতি জালিয়েও কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা করোনা সংকটকে দেখছে চোখ বন্ধ করে অন্ধের হাতি দেখার মতো করে।

আজ সোমবার (০২ আগস্ট) সকালে নিজ বাসভবন থেকে ব্রিফিংকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

করোনা সংকটে সরকার কিছুই করছে না, বিএনপিই জনগণের সাথে রয়েছে‑ দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যকে আজগুবি ও কাল্পনিক বলে আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, এটা তাদের অক্ষমতা আর ব্যর্থতা আড়াল করার অপপ্রয়াস। যারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচনের দিন ঘরে বসে থাকে আর আন্দোলনের ডাক দিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে পুলিশের গতিবিধি দেখে, তারা নাকি করোনাকালে জনমানুষের সাথে রয়েছে। একথা এখন কেউই বিশ্বাস করে না।

সরকার করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি করছে, বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ আখ্যা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনার নমুনা পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন, ফলাফলসহ প্রতিটি বিষয় প্রযুক্তির সহায়তায় এবং বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। এখানে তথ্য লুকানোর কোন সুযোগ নেই। এসব তথ্য লুকিয়ে সরকারের কী লাভ?

গার্মেন্টস কারখানা খুলে দেওয়ার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিবের সমালোচনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেব একদিকে শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে কথা বলেন। অপরদিকে গার্মেন্টস খুলে দিলেও আবার বিরোধিতা করেন।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই বিশ্ববাজারে পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ থেকে ভিয়েতনাম এগিয়ে গেছে। করোনাকালে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় পোশাক রফতানি কমেছে। এই প্রেক্ষাপটে রফতানি আদেশসমূহ কোনভাবে বাতিল হোক – তা চায় না। জীবন ও জীবিকার সাথে সমন্বয় করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকার সচেষ্ট। দেশের ভবিষ্যৎ এবং কল্যাণ চিন্তা করে সরকার বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে বর্তমানে কোন সংকট নেই। অথচ একটি মহল ভ্যাকসিন সংকট আছে বলে আতঙ্ক তৈরির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এই স্বার্থান্বেষী মহল সংকটে মানুষের মনোবল ভেঙে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী একদিকে টিকাদান কার্যক্রম চলতে থাকবে। অন্যদিকে ভ্যাকসিন আসাও অব্যাহত থাকবে। একসাথে কয়েক কোটি ভ্যাকসিন জমিয়ে রেখে কার্যক্রম শুরু করার কথা যারা ভাবছেন, তারা সঠিক বলছেন না।

সংশ্লিষ্টদের ভ্যাকসিন প্রদানের প্রটোকল অনুসরণ করে ধৈর্যের সাথে গ্রামের মানুষদের টিকা প্রদানের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা।

তিনি বলেন, ভ্যাকসিন একদিকে আসতে থাকবে, পাশাপাশি ভ্যাকসিন প্রদানের কর্মসূচিও চলতে থাকবে। এ নিয়ে সংশয়ের কোন অবকাশ নেই। আগামী সাত আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে দেশব্যাপী গ্রামপর্যায়ে গণটিকাদান কার্যক্রম। এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সরকার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্র থেকে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ করোনার শুরু থেকে জনমানুষের পাশে রয়েছে। টিকাদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জনমানুষের পাশে থাকবে দলের নেতাকর্মীরা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.