লকডাউন শিথিলে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা বিএনপির

সরকারের ঘোষিত ‘লকডাউন’ শিথিলের সিদ্ধান্তে করোনা সংক্রমণের ব্যাপক বিস্তার ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি।

আজ শুক্রবার (১৬ জুলাই) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

বিএনপির এ নেতা বলেন, সরকারের যে পরিকল্পনাবিহীন উদ্যোগ তা হচ্ছে, ঈদ উপলক্ষে লকডাউন উঠিয়ে দিল এবং মানুষকে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলো। এবার কিন্তু করোনার বিস্তার ঢাকা না, গ্রামে। এই ঈদে সবাই বাড়ি যাবে, আবার ওইখান থেকে যখন ঢাকায় ফেরত আসবে তখন করোনা নিয়ে সারা দেশে বিস্তার করার ব্যবস্থা করবে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট খুবই দ্রুত ছড়ায়। সুতরাং, করোনাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করেছে আমাদের দেশ শেষ পর্যন্ত মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত না হয়- এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, গ্রামের মানুষরা এখন ওষুধ পাচ্ছে না, তারা অক্সিজেন পাচ্ছে না, জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতে শয্যা না থাকায় তারা দুর্ভোগে পড়ছে। এর ফলে সারা দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা একেবারে হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্যে রয়েছে।

তিনি জানান, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দলের পক্ষ থেকে জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দেব। আমরা প্রতিটি জেলায় দলের কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহযোগিতায় করোনা হেলপ সেন্টার খুলেছি। এ পর্যন্ত আমরা ৪৫টি জেলায় সেন্টার খুলে ফেলেছি। আজকে ময়মনসিংহ উত্তর-দক্ষিণ, চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ, ফরিদপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, সুনামগঞ্জ, ঝালকাঠি, নরসিংদী, গোপালগঞ্জে হেলপ সেন্টারের উদ্বোধন করা হবে। সব মিলিয়ে আমাদের ৫৩টা সেন্টার হবে। আশা করি, ঈদের আগেই বাকি জেলাগুলোতে সেন্টার খুলে পারব। দেশের বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা জনগণের পাশে থাকবে।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার আমরা বরগুনা হেলপ সেন্টার খুলেছিলাম। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ আমাদের সেই সেন্টারটি বন্ধ করে দিয়েছে। জেলার হেলপ সেন্টারগুলো থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা, অক্সিজেন বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থাও থাকবে। বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে জনগণ স্বাস্থ্য-চিকিৎসা সেবা, ওষুধসহ বিভিন্ন সেবা পাবেন।

সরকারের প্রণোদনা কোথায় যায়- এমন প্রশ্ন রেখে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারকে প্রস্তাব করেছিলাম, লকডাউন সফল করতে হলে দরিদ্র, প্রান্তিক, কর্মহীন, দিন আনে দিন খায় মানুষের কাছে কমপক্ষে তিন মাস ১৫ হাজার টাকা পৌঁছে দিতে হবে। সেটা সরকার করেনি। উনারা প্রণোদনা ঘোষণা করেন। প্রণোদনাটা কোথায় দেয় আমরা কেউ জানি না। আপনারা যদি বস্তিগুলোতে গিয়ে দেখেন, তাদের জিজ্ঞাসা করেন প্রণোদনা টাকা তারা পায় কি না; আমার মনে হয়, আপনারা সঠিক উত্তরটা পেয়ে যাবেন।

ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনের পর চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ঝালকাঠি, সুনামগঞ্জ, চাঁদপুর, নরসিংদী, গোপালগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ের করোনা হেলপ সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও যুক্ত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সস্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাখাওয়াত হাসান জীবন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, শ্যামা ওবায়েদ, মোশতাক আহমেদ, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.