ইভ্যালিসহ ১০ ই-কমার্সের কেনাকাটায় এবার ব্যাংক এশিয়ার নিষেধাজ্ঞা

ইভ্যালি ও আলেশা মার্টসহ ১০টি ই-কমার্সের সঙ্গে ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রি-পেইড কার্ডের লেনদেন বন্ধ করেছে ব্যাংক এশিয়া। এর আগে ব্র্যাক ব্যাংকও এই ১০ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব অনলাইন মার্কেট প্লেস-এর বিরুদ্ধে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ব্যাংক দুটি।

নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপিং, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, কিউকম, আদিয়ান মার্ট ও নিডস ডট কম বিডি।

‘টেকনিক্যাল কারণে’ এসব ই-কমার্সের সঙ্গে লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে বলে নিজ গ্রাহকদের জানিয়েছে ব্যাংকটি। বুধবার (২৩ জুন) ব্যাংক এশিয়ার নিজ গ্রাহকদের পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, ‘টেকনিক্যাল কারণে ব্যাংক এশিয়া কার্ডে কিছু লোকাল ই-কমার্স লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।’

এ বিষয়ে বিস্তারিত ১৬২০৫ নাম্বারে কল করে জানতে বলা হয়েছে। ব্যাংক এশিয়ার কল সেন্টারে কল করলে আরমান নামের একজন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ২৩ জুন থেকে ১০টি ই-কমার্সের সঙ্গে লেনদেন করা যাবে না।

এছাড়া ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবি) ও সিটি ব্যাংকও তাদের গ্রাহকদের সম্ভাব্য প্রতারণার ব্যাপারে সতর্ক করেছে। বুধবার ইউসিবি তাদের গ্রাহকদের এক বার্তায় জানিয়েছে, ইউসিবি কার্ড দিয়ে ই-কমার্স ট্রানজেকশনে অনলাইন মার্চেন্টের সাথে লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জন্য ইউসিবি দায়ী থাকবে না। এর আগে মঙ্গলবার ব্র্যাক ব্যাংক ইভ্যালি ও আলেশা মার্টসহ ১০টি ই-কমার্সের সঙ্গে লেনদেন স্থগিত করে।

ইভ্যালিসহ দেশের বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে পণ্য বিক্রির অফার দিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের প্রলুব্ধ করছে। তাদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে কয়েক মাস পর ওই পণ্য সরবরাহ করছে। ফলে তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা থাকছে। এ অবস্থায় কোম্পানিটি বসে গেলে বা কর্তৃপক্ষ ওই টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেলে ওই ক্রেতাদের সব টাকা হারাতে হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শনে উঠে এসেছে, ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সম্পদের চেয়ে ৬ গুণের বেশি এই দেনা পরিশোধ করার সক্ষমতা কোম্পানিটির নেই।

ইভ্যালির কৌশল অবলম্বনকারী অন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্র কম-বেশি একইরকম। তাদেরও দায়-দেনার পরিমাণ নিজেদের মূলধন বা সম্পদের চেয়ে অনেক বেশি। তাই প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেলে সেখানে জমা রাখা গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। পাশাপাশি যেসব প্রতিষ্ঠান এই ই-কমার্স সাইটগুলোকে বাকীতে পণ্য সরবরাহ করছে তারা পণ্য-মূল্য পাবে না।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.