আলঝেইমারের প্রথম ওষুধ অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র

বয়স্কদের মস্তিষ্কের স্মৃতিভ্রমের রোগ আলঝেইমারের চিকিৎসায় অ্যাডুকেনুম্যাব নামে একটি ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। প্রায় ২০ বছর ট্রায়ালের পর বায়োজেন কোম্পানির এই ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেল।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই ওষুধটির অনুমোদনের সিদ্ধান্তে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল দাতব্য সংস্থাগুলো। তবে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে এর সম্ভাব্য প্রভাবের ব্যাপারে বিজ্ঞানীদের মাঝে দ্বিমত রয়েছে।

এক বিবৃতিতে এফডিএ জানায়, অ্যাডুকেনুম্যাব মস্তিষ্কে অ্যালঝেইমার সৃষ্টিকারী এক ধরনের প্রোটিন হ্রাস করতে পারে বলে প্রমাণ মিলেছে। ফলে রোগীদের গুরুত্বপূর্ণ উপকারের পূর্বাভাস দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই ওষুধটির।

মানবদেহে অ্যাডুকেনুম্যাবের তিন দফা পরীক্ষা চালানো হয়। ২০১৯ সালে সবশেষ ধাপের আন্তর্জাতিক ট্রায়ালে প্রায় তিন হাজার মৃদু উপসর্গের রোগী এতে অংশ নেন। ওষুধটি আলঝেইমারের উপসর্গের চেয়ে সাধারণ রূপ স্মৃতিভ্রমের অন্তর্নিহিত কারণকে টার্গেট করে মানব শরীরে কাজ করে থাকে।

যুক্তরাজ্যে আলঝেইমারের মৃদু উপসর্গের রোগী আছেন প্রায় ১০ হাজার। ওষুধটি ব্রিটেনে অনুমোদন পেলে আলঝেইমারের চিকিৎসায় ভূমিকা রাখতে পারে।

আলঝেইমার রোগ কী?
আলঝেইমার রোগ একটি ডিজেনারেটিভ রোগ। যা মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। বয়স্কদের মধ্যে এ রোগ দেখা যায়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির স্মৃতিশক্তি খুব দুর্বল হয়ে যায় এবং তাদের মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করতে সক্ষম হয় না।

যার কারণে তাদের প্রতিদিনের রুটিন ধীরে ধীরে অবনতি হতে শুরু করে। আলঝেইমার এক ধরনের ডিমেনশিয়া হিসেবেও পরিচিত। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি জিনিস এবং মানুষের মুখ শনাক্ত করতে প্রচুর অসুবিধায় পড়েন। এটি একটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সমস্যা।

আলঝেইমারের লক্ষণ ও উপসর্গ
প্রাথমিক পর্যায়ে আলঝেইমারে আক্রান্ত ব্যক্তির সময় জ্ঞান থাকে না, জিনিস হারিয়ে ফেলেন, খারাপ অনুমানের কারণে খারাপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন, সময়মতো দৈনিক কাজ শেষ করতে অক্ষমতা, সামাজিক কাজ থেকে বিরত থাকা, কথা বলতে সমস্যা, দৈনন্দিন জীবনে প্রভাবিত স্মৃতি সমস্যা।

দ্বিতীয় পর্যায়ে আলঝেইমারে আক্রান্ত ব্যক্তির অকারণে রাগ বাড়ে, বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সদস্যদের চিনতে সমস্যা, পড়ালেখায় অসুবিধা, নতুন কাজ শিখতে এবং বুঝতে অক্ষম, কান্নাকাটি, উদ্বেগ, ঘোরাঘুরি, অস্থিরতা ইত্যাদির মতো আচরণ দেখা যায়।

আক্রান্ত ব্যক্তির গুরুতর লক্ষণগুলো হলো- ওজন হ্রাস, খিঁচুনি হওয়া, ত্বকে সংক্রমণ, হতাশা, খাবার গিলতে সমস্যা, প্রস্রাব কম হওয়া ইত্যাদি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.