‘টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতির শিকার বাংলাদেশ’

প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাকসিনের (টিকার) সুনির্দিষ্ট গাইড লাইন না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।

তিনি বলেন, দেড় বছর হলো আমরা ২ শতাংশ মানুষকেও ভ্যাকসিন দিতে পারি নাই। কত দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন দিতে পারবেন? চায়না, রাশিয়া কেন ট্রায়াল দিতে পারেনি? আজ ভ্যাকসিন নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতির শিকার বাংলাদেশ। যে কারণে চীন থেকে ভ্যাকসিন পাব কি না সেটাও অনিশ্চিত। এখাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি।

আজ রোববার (০৬ জুন) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, প্রস্তাবিত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এত বেশি বৈদেশিক ঋণ নির্ভর, এত বেশি অভ্যন্তরীণ ঋণ নির্ভর; যেটা ৫০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এত ব্যাপক ঋণ নির্ভর বাজেট অতীতে কোন সরকারের আমলে এমন বাজেট হয়নি।

অন্যদিকে ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট অবাস্তবায়িত থেকে গেছে। করোনাকালে যে বাজেট দেওয়া উচিত ছিল সেটা দিতে পারে নাই এবং বাস্তবিক অর্থে সরকারের নীতি এবং ভুল সিদ্ধান্তের কারণে জনদুর্ভোগ ও ভোগান্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমি সব চাইতে বেশি উদ্বিগ্ন। দ্বিতীয় ঢেউ সারাদেশকে অস্থির করে তুলেছে। আমার নিজের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী বিভাগ সবচাইতে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। এখন আমের মৌসুম। আম চাষিরা ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ভারতের ধরন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ল। দেশের দ্বিতীয় বৃহতম স্থল বন্দর সোনা মসজিদ বন্দর এবং যশোর বেনাপোলে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি ঢুকছে। গাড়ির সাথে চালক, হেলপার, তাদের সহকারী ঢুকছে, তারা যত্রতত্র ঘোরাঘুরি করছে, সেখানে যে নিরাপত্তা গ্রহণ করা দরকার সেটি করতে পারেনি বলেই বাংলাদেশের গোটা এলাকায় ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি ভারত মতো অবস্থা যেন না হয়।

বিএনপির এ সংসদ সদস্য আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো। গত বছরে সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল সেটি জনগণের কল্যাণে সঠিকভাবে ব্যয় হয়েছে তা বলতে পারবে না।

তিনি রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ ওই এলাকার প্রত্যেক হাসপাতালে ১০০টি করোনা ইউনিটি করার দাবি করেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগের সংস্কার দাবি করেন। এজন্য মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, রাজনীতিবিদ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নিয়ে একটি বৈঠক করে স্বাস্থ্য বিভাগের সংস্কার করার দাবি করেন তিনি।

সরকারের মেগা প্রজেক্ট সম্পর্কে হারুনুর রশীদ বলেন, মেগা প্রজেক্ট অবশ্যই দরকার আছে, কিন্তু মানুষকে আগে বাঁচাতে হবে। মানুষ বাঁচলে সবকিছু হবে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সুরক্ষা কার্ডের মাধ্যমে সত্যিকারের দরিদ্র মানুষের কাছে টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, চোর বাটপারদের মাধ্যমে না। সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে বা এনজিওদের মাধ্যমে সরাসরি আইডির মাধ্যমে টাকা দেওয়ার দাবি করছি।

তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইতে বেশি ছাত্র-ছাত্রী পড়ালেখা করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। কেন কর আরোপ করা হবে? এতে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.