তিন মাস পর পর বাজেটের অন্তর্বর্তী মূল্যায়নের প্রস্তাব মেট্রপলিট্যান চেম্বার

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মেট্রপলিট্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রী (এমসিসিআই), ঢাকা। বাজেটের কিছু উদ্যোগকে স্থানীয় শিল্পবান্ধব বলে মনে করছে তারা। অন্যদিকে কিছু প্রস্তাবনা ব্যবসার প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করবে বলেও তাদের আশংকা।

আজ শুক্রবার (৪ জুন) প্রস্তাবিত বাজেটের উপর দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এই মতামত তুলে ধরেছে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে পুরনো এই প্ল্যাটফরম। তারা করোনা পরিস্থিতিজনিত অনিশ্চিত অবস্থার কারণে প্রতি ৩ মাস পর পর আলোচিত বাজেটের অন্তর্বর্তী মূল্যায়নের প্রস্তাব করেছে।

এ বিষয়ে এমসিসিআই বলেছে, চলমান মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের অনুমান এখনো অনিশ্চিত। তাই পরবর্তী বছরে প্রতি ৩ মাস পর পর বাজেটের অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন হওয়া উচিত; যাতে প্রয়োজন হলে এটি পুনর্গঠন ও সংশোধন করা যায়।

গতকাল (৩ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের বাজেট এটি। বাজেট ঘাটতিও রেকর্ড পরিমাণ।

এমসিসিআই বাজটের ৬টি বিষয়ের প্রশংসা করেছে। এগুলো হচ্ছে- দক্ষতা উন্নয়ন ও টিকা ব্যবস্থাপনাসহ স্বাস্থ্য খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া, সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, যুবক ও নারীদের বহুমাত্রিক সমস্যা সমাধান, কৃষি খাতের উন্নয়ন ও ব্যবসা-বান্ধব কর ব্যবস্থা।

তবে সংগঠনটি এটিও মনে করছে, আলোচিত খাতসমূহে বাজেট বরাদ্দের প্রকৃত সুবিধা পেতে হলে চূড়ান্ত বাজেট ডকুমেন্টে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন।

চেম্বার পর্যায়ক্রমে ৮০ শতাংশ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনার প্রশংসা করেছে। পাশাপাশি শিল্প-ব্যবসায় জড়িত মালিক, শ্রমিক ও কর্মচারিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকার আওতায় নিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছে। চেম্বার মনে করে, এরা টিকা না নেওয়া পর্যন্ত অনেক ঝুঁকিতে থাকবেন, যা অর্থনীতিকে পুনরায় সম্পূর্ণভাবে খুলে দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক সংযোগগুলির পুরোপুরি প্রতিষ্ঠাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

এমসিসিআই করপোরেট কর ২.৫০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাবের প্রশংসা করেছে। অন্যদিকে আগাম আয়কর (এআইটি) হ্রাস বা বিলোপে বাজেটে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে।

আগামী বছরের বাজেটে পাইকারী বিক্রেতা, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়ী, প্রোপ্রাইটরশিপ, স্টার্টআপ ও দুর্বল কোম্পানি, যাদের বার্ষিক টার্নওভার ৩ কোটি টাকার বেশি, তাদের ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স ০.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এমসিসিআই এই কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেছে, আয়করের দর্শন অনুসারে মুনাফার উপর কর আরোপ হয়, টার্নওভারের উপর। তাছাড়া বর্তমানে করোনা মহামারীকালীন সময়ে ন্যুনতম টার্নওভার ট্যাক্স একেবারেই যৌক্তিক নয়।

বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের কর রেয়াত সুবিধায় বিনিয়োগসীমা দেড় কোটি টাকা থেকে ১ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি ব্যক্তি পর্যায়ে সঞ্চয় ও পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে এমসিসিআই।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.