লকডাউনের মধ্যেও রফতানিতে সুখবর

চলতি বছরের এপ্রিলে পণ্য রফতানি গত বছরের তুলনায় ছয় গুণ বেড়েছে। এপ্রিলে রফতানি আয় বেড়ে প্রায় তিন দশমিক ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অর্থনীতির চাকা আবার চালু হওয়ায় এবং নতুন করে তারা পোশাক আমদানি শুরু করায় এটি সম্ভব হয়েছে।

এপ্রিলে রফতানি থেকে আসা আয় গত বছরের একই মাসের তুলনায় অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে আরোপিত কড়া লকডাউন ও বিভিন্ন কারখানা বন্ধ থাকায় গত বছরের এপ্রিলে দেশের অর্থনীতির ওপর নিদারুণ আঘাত আসে। ফলে রফতানির পরিমাণ বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে শূন্য দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছিল।

বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছরের সার্বিক রফতানি জুলাই থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়ে ৩২ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। তার মানে রফতানি প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক পর্যায়ে আছে দেশ।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে ৫ এপ্রিল থেকে সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করলেও তৈরি পোশাকসহ সব শিল্পকারখানার উৎপাদন অব্যাহত রাখে। ফলে, রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।

ইপিবির পরিসংখ্যান আরও বলছে, তৈরি পোশাক, পাট ও পাটপণ্য, চামড়া ও চামড়াপণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্লাস্টিক পণ্য, রাসায়নিক পণ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রফতানি ইতিবাচক ধারায় ফেরার কারণেই সার্বিকভাবে পণ্য রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে হিমায়িত খাদ্যের রফতানি কমেছে।

সার্বিকভাবে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) তিন হাজার ২০৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে আট দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।

চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে দুই হাজার ৬০০ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ছয় দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি।

ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) দুই দশমিক ৫৫ শতাংশ কমেছিল তৈরি পোশাক খাতের রফতানি। অন্যদিকে হিমায়িত মাছসহ সবধরনের হিমায়িত খাদ্যের রফতানি কমে ৯ শতাংশের মতো। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ছয় শতাংশের বেশি রফতানি কমেছে। ফার্নিচারের রফতানি কমেছে ১৩ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি রফতানি কমেছে জাহাজ শিল্পে। এই খাতে রফতানি কমেছে ৯৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

অন্যদিকে, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ১০৩ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। এছাড়া ৯৫ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রফতানি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৫৪ শতাংশের বেশি।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে ৭৬ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়া পণ্য, ৪৩ কোটি ডলারের প্রকৌশল পণ্য, ৩৯ কোটি ডলারের হিমায়িত খাদ্য রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে চামড়া ও চামড়া পণ্যে সাড়ে আট শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

অবশ্য চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে আরও ৮৯৩ কোটি ডলার প্রয়োজন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.