বিদ্যুৎ কোম্পানির চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে চেষ্টা করছে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানির কাছ থেকে সরকারের বিদ্যুৎ কেনার চুক্তির (Power Purchasing Agreement-PPA) মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। লিখিত সুপারিশ ছাড়াও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান সরকারের নীতিনির্ধারকদের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন।

তবে দেশে চাহিদার তুলনায় বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ থাকা এবং সরকারের নতুন নীতিগত অবস্থানের কারণে এ চেষ্টা কতটা সফল হবে তা বলা বেশ কঠিন।

উল্লেখ, তালিকাভুক্ত বিদ্যিৎ কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানির অনেকগুলো ইউনিটের পিপিএর মেয়াদ শেষের দিকে চলে আসছে। এর মধ্যে দেশের প্রথম বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (কেপিসিএল) দু’টি প্ল্যান্ট থেকে সরকারের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তির (পিপিএ) মেয়াদ চলতি বছরের মে মাসে মাসে শেষ হতে যাচ্ছে। কোম্পানিটির প্রথম ইউনিটের পিপিএর মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হলেও সরকার আর সেটির চুক্তি নবায়ন করেনি। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আলোচিত দুই ইউনিটের পিপিএ নবায়নের সম্ভাবনাও একেবারে কম। ইউনিট দুটির পিপিএ নবায়ন না হলে কোম্পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও সরকার তা কিনবে না। বর্তমান নীতিমালা অনুসারে বাইরেও এই বিদ্যুৎ বিক্রির সুযোগ নেই। তাই কোম্পানিটি কার্যত বন্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে। এতে বাজারের বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

কেপিসিএলের ভবিষ্যতের এই অনিশ্চয়তার মুখে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিএসইসি কোম্পানির আলোচিত দুই প্ল্যান্টের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করে গত ১৫ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

তবে এ বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন ধরনের পাওয়ার কোম্পানিসমূহ পুঁজিবাজার থেকে বিভিন্ন সময় মূলধন সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এ সব কোম্পানির বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে খুলনা পাওয়ার কোম্পানির মালিকানাধীন দু’টি কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি ইউনিট-২ ও খানজাহান আলী পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে সরকার বা বিউবোর পিপিএ বাড়ানোর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। যার মেয়াদ পর্যায়ক্রমে চলতি বছরের ৩১ মে এবং ২৮ মে তারিখে শেষ হবে।

এ পরিস্থিতিতে খুলনা পাওয়ার কোম্পানিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের অর্থ লভ্যাংশ থেকে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফেরত আসেনি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এ কোম্পানির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কমিশন উদ্বিগ্ন। তাই কেপিসিএলসহ অন্যান্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির পিপিএ চুক্তি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে নবায়নের সুযোগ রয়েছে কি না, তা জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে কমিশন।

বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম  বিষয়টি নিশ্চিত করে অর্থসূচককে বলেন, বাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন এই উদ্যোগ নিয়েছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.