পাটুরিয়া ও শিমুলিয়া ঘাটে এখন ঈদকালের ভিড়

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আগামীকাল বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হচ্ছে। এ কারণে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে। যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় এখন এই ঘাটে। চাপ বেড়েছে পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া নৌরুটেও।

আজ মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ছোট গাড়ি ও পণ্যবোঝাই ট্রাকের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া নৌরুট পারের অপেক্ষায়।

এদিকে শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ বলেছে, ফেরিতে যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এমন চাপ শুধু ঈদের সময়ই দেখা যায়।

শিমুলিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়াত আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বলেন, শিমুলিয়া ঘাট, রাস্তায় কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই। যাত্রী ও যানবাহনের এতটাই চাপ যে ঘাট এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। লকডাউন উপেক্ষা করে ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হচ্ছে। রো-রো, ডাম্প, মিডিয়াম, কে–টাইপসহ ১৪টি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন পার হচ্ছে। অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানুষের মধ্যে করোনার সংক্রমণ নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে গাদাগাদি করে চলছেন সবাই।

পাটুরিয়া ঘাটে অপেক্ষমান রাজবাড়ীগামী প্রাইভেটকারের যাত্রী বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কয়েকজন মিলে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে বাড়ি যাচ্ছি, কিন্তু রাত ৩টা থেকে এখনো আটকে আছি। কখন বাড়ি পৌঁছাতে পারবো সেই চিন্তায় আছি।

বাড়ি যাচ্ছেন কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি ঢাকায় ছোট একটি মুদির দোকান করি, লকডাউনের জন্য সব কিছু বন্ধ থাকার কথা সে জন্য গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। কারণ ঢাকায় থাকলে যে টাকা খরচ হবে সে টাকা তো আয় করতে পারবো না, এই কারণে বাড়ি যাওয়া।

পাটুরিয়া ঘাটে দায়িত্বরত সার্জেন্ট গুলজার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় মধ্যরাত থেকেই ছোট গাড়ির (প্রাইভেটকার) বেশ চাপ রয়েছে। আর সে কারণেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই গাড়িগুলো পার করা হচ্ছে। এছাড়া সিরিয়াল অনুযায়ী সাধারণ পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো পারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

এদিকে, শিমুলিয়া ফেরিঘাট ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাল থেকে দেশে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এই ঘোষণার পর থেকেই শিমুলিয়া ঘাট হয়ে দক্ষিণ অঞ্চলের ২১ জেলার বহু মানুষ বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন। গত রোববার সকাল থেকেই ঘাটে চাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে চাপ অনেক বেশি বেড়ে যায়। গতকাল সারা দিনই ঘাটে যানবাহন ও মানুষের ভিড় ছিল। তবে আজ ভিড় সবকিছু ছাড়িয়ে গেছে। ঘাট ও সড়কে নয় শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আছে।

শিমুলিয়া ফেরিঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মো. হিলাল উদ্দিন বলেন, আজ সকাল থেকে যাত্রী ও গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। এমন চাপ ঈদের দু-এক দিন আগে দেখা যেত। লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় ফেরিতে যাত্রীরা পারাপার হচ্ছেন। ঘাটে সাত শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আছে। ঘাটে চাপ আরও বাড়তে পারে। রোববার দুই হাজারের বেশি যানবাহন পারাপার করা হয়েছে। আজকে এই সংখ্যা তিন হাজারের বেশি হবে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.