পশ্চিমবঙ্গে বুথের বাইরে ৪ জনকে গুলি করে হত্যা

বিধানসভা নির্বাচনে আজ শনিবার (১০ এপ্রিল) চতুর্থ দফায় ভোট শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ জেলার ৪৪টি কেন্দ্রে। কড়া নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও রাজ্যের কুচ বিহার জেলায় বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চারজনকে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় বাহিনী।

নিহতরা সকলেই তৃণমূলের সমর্থক বলে দাবি করেছে দলটি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। মাথাভাঙা হাসপাতালে তাদের ময়নাতদন্ত চলছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে আরও ৪ ব্যক্তি জখম হয়েছেন বলে জানা গেছে।

শীতলকুচির জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এই ঘটনা ঘটে। গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, সিআরপিএফ জওয়ানরা বিজেপির হয়ে কাজ করছে। রাতভর ‘মদ-মাংস খেয়ে’ সকালে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন করানোর ভার যাদের কাঁধে, তাদের নির্বিচারে গুলি চালানোর অধিকার কে দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জোড়াফুল শিবির।

স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মী সংবাদমাধ্যমে বলেন, দলে দলে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন মানুষ। সেই সময় বিনা প্ররোচনায় গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। বুথের ভিতরে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল, তারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূল।

অন্য দিকে, তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যাওয়া নিশীথ প্রামাণিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই গোটা ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন। তার বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে যে ভাবে লাগাতার উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার জন্য মানুষ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণ করে। তাতেই গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে সিআইএসএফ।

গোটা ঘটনায় ‘অ্যাকশন টেকেন’ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন জানিয়েছে, সিআরপিএফ নয়, গুলি চালিয়েছে সিআইএসএফ।

শনিবার সকালে চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে দফায় দফায় শীতলকুচিতে সংঘর্ষ বেঁধেছে তৃণমূল এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে। সকালে পাঠানটুলি শালবাড়ির ২৮৫ বুথে ভোট দিতে গিয়ে আনন্দ বর্মণ নামের এক ১৮ বছরের কিশোরের মৃত্যু হয়। তার পরিবারের লোকজন নিজেদের বিজেপি সমর্থক বলে দাবি করলেও, আনন্দ কাদের পক্ষে, তা নিয়েও রাজনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়। তার মধ্যেই এই ঘটনা।

চতুর্থ দফায় ভোট হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ জেলার ৪৪টি কেন্দ্রে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলার নয় এবং আলিপুরদুয়ারের পাঁচটি বিধানসভা আসনের সবগুলোতেই ভোটগ্রহণ চলছে। এছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১টি, হাওড়া জেলার ১৬টির মধ্যে নয়টি এবং হুগলির ১৮টির মধ্যে ১০টি আসনেও ভোট হচ্ছে।

এর আগে প্রথম দফায় গত ২৭ মার্চ ৩০টি, দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল ৩০টি এবং তৃতীয় দফায় ৬ এপ্রিল ৩১টি আসনে ভোট নেওয়া হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.