নারায়ণগঞ্জে হেফাজতের হরতালে সহিংসতায় ৬ মামলা

হেফাজতে ইসলামের হরতালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের তিন কিলোমিটার এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে। প্রত্যেকটি মামলায় ২৫ থেকে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সোমবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে পাঁচটি এবং র‌্যাব বাদী হয়ে একটি, মোট ছয়টি মামলা করে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, জনগণের জানমালের ক্ষতি, নাশকতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা, সড়ক অবরোধ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পাঁচটি এবং র‌্যাব বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।

সন্ত্রাস দমন আইনে পুলিশের চারটি ও র‌্যাবের একটিসহ মোট পাঁচটি মামলা এবং সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা ও আহত করার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি এখনও। জড়িত লোকজনকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি মশিউর রহমান।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ হেফাজতের ডাকা হরতালে স্বাভাবিক ছিল নারায়ণগঞ্জ শহর ও উপজেলা এলাকাগুলো। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এলাকা ছিল হরতাল সমর্থকদের দখলে। তারা এই মহাসড়কে তাণ্ডব চালিয়ে রণক্ষেত্রে পরিণত করে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় ১৮টি যানবাহনে আগুন দেয়। নির্বিচারে চলে ভাঙচুর। দফায় দফায় বিজিবি-পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এতে পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। সকাল-সন্ধ্যা হরতালের পুরো সময় জুড়ে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও ছিল পিকেটাররা। তারা অন্তত ১২ জন সাংবাদিককে মারধর ও দুইটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। মহাসড়কটি ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত আটটা পর্যন্ত ছিল হরতাল সমর্থকদের দখলে।

জেলা পুলিশের তথ্যমতে, এই সময়ের মধ্যে ১৮টি ট্রাক, বাস, কাভার্ডভ্যানে আগুন, নির্বিচারে যানবাহনে ভাঙচুর, সাংবাদিকদের মারধর করেছে হেফাজতের পিকেটাররা। এই সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শর্ট গানের রাবার বুলেট ও চায়নিজ রাইফেলের প্রায় ৪ হাজার রাউন্ড গুলি ছুঁড়তে হয়েছে পুলিশ ও বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাকে। পিকেটারদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রায় দেড়শ’ টিয়ার শেলও নিক্ষেপ করা হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.