সরকার বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ সফল: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকার ভয়-ভীতি ছড়িয়ে, মিথ্যা প্রচারণা করে বাংলাদেশকে পুরোপুরি বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়াতে নিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে তারা সম্পূর্ণ সফল হয়েছে।’

শনিবার কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে কেএম ওবায়দুর রহমান স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন।

সুনামগঞ্জে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী সুনামগঞ্জে সাম্প্রদায়িক ঘটনা সম্পর্কে অবলীলায় মিথ্যাচার করে চলেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা বিএনপিকে দেখে, বিএনপিকে ভয় পায়, বিএনপিকে নিয়ে তারা দুঃস্বপ্ন দেখে। এখানেও (সুনামগঞ্জে) তারা চেষ্টা করেছে বিএনপির নাম কীভাবে চালানো যায়।’

এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ভুমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম এ ঘটনার প্রকৃত চিত্রটা তুলে ধরেছে। যেটার শুরুটা করেছে যুবলীগের নেতা। তার সঙ্গে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের কারো হাওড়ের বিষয় নিয়ে সমস্যা ছিলো এবং তার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সব সময় বিনষ্ট হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে। একটা জরিপ করুন যে, কতজন হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি, তাদের বাড়ি-ঘর কারা দখল করেছে? সেখানে তারা বিএনপির লোককে খুঁজে পাবে না। বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের লোকেরা দখল করে আছে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। অথচ অবলীলায় তারা এই মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।’

দলের নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের জন্য আরো সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কখনো নিরাশ হয়নি, আমরা হতাশ হয়নি। আমরা নিজেরা সংগঠিত হচ্ছি, আমরা ১৪ বছর ধরে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা সবচেয়ে বেশি মূল্য দিয়েছি। এই মূল্য আরো দেবো। হতাশাই শেষ কথা নয়, হতাশার পরেই নতুন সূর্যোদয় হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘স্বাধীনতা এদেশের সকল মানুষের। মুক্তিযুদ্ধ এই দেশের গুটিকয়ে নয়, সকলেই করেছে। কিন্তু আজ জনগণ এই স্বাধীনতার ৫০ বছরের উৎসব যদি করতে না পারে তাহলে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন হয় না। শুধুমাত্র বিদেশিদের এনে আজকে সূবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে সরকার। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী-এটা জনগণের অনুষ্ঠান। সেই জনগণকে আজকে ঘরে বন্দি রেখে কিছু বিদেশিদের এনে সার্টিফিকেট দিয়েছে।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দেশের অবস্থা তো গোল্লায় যাচ্ছে। মোটা চালের দাম ৫২ টাকা। আর বিদেশ থেকে প্রতিদিন একেকটা ধরে নিয়ে আসছে। আর তারা প্রথম কথা বলছে, বাংলাদেশের অগ্রগতি দেখবার মতো। কেবল জিডিপি মানে দেশের অর্থনীতির উন্নতি না। করোনার আগে দরিদ্র লোকের সংখ্যা শতকরা ২১ ভাগ, এখন ৪২ ভাগ।’ এরকম অবস্থা থেকে উত্তরণে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাটের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকনসহ প্রয়াত নেতা কেএম ওবায়াদুর রহমান কন্যা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ প্রমুখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.