বিক্ষোভে উত্তাল মিয়ানমার, নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ

সেনা অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে ফের উত্তাল মিয়ানমারের রাজপথ। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ করছেন তারা। একই সঙ্গে সেনা ও পুলিশের গুলিতে নিহতদের স্মরণ করছেন বিক্ষোভকারীরা।

রাতভর নিরাপত্তা রক্ষীদের অভিযান সত্ত্বেও রোববার (০৭ মার্চ) সকালে মিয়ানমারের রাজপথে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে অসংখ্য মানুষ। লাখো জনতার এমন বিক্ষোভ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে পুলিশ।

রোববার সকাল থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপরই ইয়াঙ্গুনসহ বেশ কিছু এলাকায় কঠোর হতে থাকে নিরাপত্তা রক্ষীরা। ছুড়তে শুরু করে ফাঁকা গুলি, টিয়ার গ্যাস।

তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স।

ফেসবুকের লাইভ ভিডিওতে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশের লাশিও শহরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে স্টান গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে।

ঐতিহাসিক মন্দিরের শহর বাগানে আন্দোলনকারীদের সরাতে পুলিশকে ফাঁকা গুলি ছুড়তে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী। অবশ্য বেশ কয়েকটি শহরে এখনও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের খবর পাওয়া গেছে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, সেনা বাহিনী ও পুলিশের গুলিতে নিহতদের স্মরণে মান্দালয়ে দুই মিনিট নীরবতা পালন করে রাজপথে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দাউইর একজন আন্দোলনকারী নেতা জনতার উদ্দেশে বলেন, তারা মানুষকে পাখির মতো হত্যা করছে। তাদের বিরুদ্ধে যদি বিদ্রোহ না করি আমরা তাহলে কী করবো? আমরা অবশ্যই বিদ্রোহ করবো।

এরআগে রাতভর ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চালায় নিরাপত্তা রক্ষীরা। এমন পরিস্থিতিতেও সকালের দিকে রাজপথে জড়ো হন বিক্ষুব্ধরা। এই এলাকায় সকালের দিকে গুলি ছুড়েছে পুলিশ। পরে অন্তত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইয়াঙ্গুনের কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ইয়াঙ্গুনের বেশ কটি এলাকায় সেনাবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালায়। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে তিন জন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেসি গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) বলেছে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত দেশটিতে এক হাজার সাতশ’র বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থান ও দেশটিতে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিকে আটক করার পর থেকেই ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রতিদিনের বিক্ষোভ-ধর্মঘটের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থমকে গেছে, স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য।

জাতিসংঘ বলছে, মিয়ানমারে বিক্ষোভ সমাবেশে সেনা ও পুলিশের গুলিতে ৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.