চলচ্চিত্র শিল্পে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দিতে ব্যাংকগুলোকে চুক্তির নির্দেশ

চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য গঠিত এক হাজার টাকার পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রদানে ২০২২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে দেশের আগ্রহী তফসিলি ব্যাংকগুলোকে চুক্তি স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের সাথে এই চুক্তি সম্পাদন করবে ব্যাংকগুলো।

আজ বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপণ জারি করে দেশের সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

চলচ্চিত্র শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিদ্যমান সিনেমা হলগুলো সংস্কার ও আধুনিকায়ন এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণের উদ্দেশ্যে স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ/বিনিয়োগ প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগ্রহী তফসিলি ব্যাংকগুলোকে বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণের জন্য ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের সাথে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।

এতে বলা হয়, এই স্কিমের আওতায় গ্রাহককে চুড়ান্তভাবে ঋণ প্রদানের অনুমোদন দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে তহবিল লভ্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হবে। এরপর তফসিলি ব্যাংক গ্রাহককে ঋণ প্রদানের অনুমোদন ও বিতরণ সম্পন্ন করে ওই ডিপার্টমেন্টের কাছে পুনঃঅর্থায়নের জন্য আবেদন করবে।

তফসিলি ব্যাংক প্রতিটি গ্রাহকের জন্য পরিমাণ নির্বিশেষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া প্রথম কিস্তির তারিখ হতে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়নের মেয়াদ ও গ্রেস পিরিয়ড হিসাবায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে পুনঃঅর্থায়নের অর্থ প্রথম কিস্তির মেয়াদ হতে এক বছর সময়সীমার মধ্যে ব্যবহার নিশ্চিত করতেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, গ্রেস পিরিয়ড চলাকালীন আরোপিত সুদ ঋণের অবশিষ্ট মেয়াদের মধ্যে সমভাবে বণ্টনপূর্বক আদায় করা হবে। সুদসহ পুনঃঅর্থায়নের অর্থ ২৮টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক, মতিঝিল অফিসে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের টাকা চলতি হিসাব বিকলনের মাধ্যমে আদায় করা হবে। স্কিমের আওতায় গৃহীত অর্থ মেয়াদপূর্ব সম্পূর্ণ সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কোন অতিরিক্ত অর্থ কর্তন করা হবে না এবং তফসিলি ব্যাংকও গ্রাহকের নিকট হতে এরূপ ক্ষেত্রে কোন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে পারবে না। ব্যাংক কর্তৃক আংশিক সমন্বয়ের কোন সুযোগ থাকবে না।

স্কিমের আওতায় গৃহীত অর্থের উপর সাধারণভাবে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সুদ আরোপ ও আদায় করা হবে। তবে, মেয়াদপূর্ব সমন্বয়ের ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক ভগ্নাংশের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে অর্থ জমা হওয়ার পূর্বদিন পর্যন্ত দৈনিক ভিত্তিতে সুদ আদায় করা হবে।

এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলারে বলা হয়, এ স্কিম হতে প্রথম ধাপে ৫০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। প্রথম ধাপে বিতরণকৃত ঋণ/বিনিয়োগের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হবার পর দ্বিতীয় ধাপে ৫০০ কোটি টাকা বিতরণযোগ্য হবে। ব্যাংকিং নিয়মাচার অনুসরণপূর্বক প্রত্যেক গ্রাহককে প্রতিটি সিনেমা হলের জন্য ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধার প্রাপ্যতা যুক্তিযুক্তভাবে অর্থায়নকারী ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হবে। তবে, তা কোনভাবেই প্রতিটি সিনেমা হলের বিপরীতে ৫ কোটি টাকার অধিক হবে না।

স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী তফসিলি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক হতে নির্ধারিত ১ দশমিক ৫ শতাংশ হারে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। গ্রাহক পর্যায়ে মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ শতাংশ সুদ/মুনাফা এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ/মুনাফা হারে তফসিলি ব্যাংক অর্থায়ন করবে। পুনঃঅর্থায়ন সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ/বিনিয়োগ ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সমমাসিক-ত্রৈমাসিক কিস্তিতে সর্বোচ্চ ৮ আট বছর মেয়াদে গ্রাহক কর্তৃক পরিশোধ্য হবে। বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক এ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

অর্থসূচক/এনএইচ/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.