চতুর্থ ধাপের ভোট হবে সম্পূর্ণ সুষ্ঠু: ইসি সচিব

চতুর্থ ধাপের পৌরসভা নির্বাচন পুরোপুরি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে চতুর্থ ধাপের পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

এক সংবাদকর্মী ইসি সচিবকে প্রশ্ন করেন, ‘গত নির্বাচনগুলোয় বিএনপির বড় অভিযোগ ছিল গোপন কক্ষ ও ব্যালট ইউনিট সুরক্ষিত করতে পারছেন না ইসি। ভোটকক্ষে যে এজেন্ট থাকছেন, তারা একটা বিশেষ মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য ভোটারকে প্রভাবিত করছেন।’এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন ‘আপনাদেরকে আমি যেটি বলতে পারি, আমরা একেবারে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) থেকে পুলিশ সুপার (এসপি), জেলা প্রশাসক (ডিসি), রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা– সবাইকে আমরা একই মেসেজ দিয়েছি যে, আমাদের নির্বাচনে কোনো ধরনের যেন কিছু না ঘটে। কারণ নির্বাচন কমিশনের টার্গেটই হলো নির্বাচন ফ্রি (অবাধ), ফেয়ার (সুষ্ঠু) এবং ক্রেডিবল (বিশ্বাসযোগ্য) হবে। ক্রেডিবল করতে যা যা করণীয় করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, রোববার যে ভোট অনুষ্ঠিত হবে, তা ফ্রি ফেয়ার এবং একেবারে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।’

হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের তথ্যমতে, চতুর্থ ধাপে পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। ৩৪টি জেলার ৫৫টি পৌরসভায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ২১৭ জন মেয়র প্রার্থী, ৬১৮ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ২ হাজার ৭০ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ ওয়ার্ড ৫০১টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৬৭টি। ৭৯৩টি ভোটকেন্দ্রে মোট ১৬ লাখ ৬৭ হাজার ২২৪ জন ভোটার ভোট দেয়ার কথা রয়েছে।

ইসি সচিব বলেন, ‘প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে তিন থেকে চার জন অস্ত্রধারী পুলিশ থাকবেন। অঙ্গীভূত আনসার পিসি ও এপিসি দুজন থাকবেন, তারা অস্ত্রধারী হবেন। লাঠিধারী থাকবেন ছয় থেকে সাতজন। অর্থাৎ প্রতি কেন্দ্রে ১১ থেকে ১৩ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এর বাইরে ১৬৭টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলোয় একটি করে র‌্যাব ও পুলিশের টিম থাকবে। ভোটের দিন প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। প্রতিটি সংরক্ষিত আসনে বিজিবি থাকবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে কোথাও কোথাও আমরা বিজিবি ও র‌্যাবের সংখ্যা বৃদ্ধি করে দিয়েছি।’

হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে বিজিবির সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে ১৭টি র‌্যাবের টিমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে গাইডলাইন রয়েছে, তার থেকেও বেশি আমরা দিয়েছি।’

কমিশন সভায় চতুর্থ ধাপের নির্বাচন নিয়ে কমিশন আলোচনা করেছে, তাতে দেখা গেছে আমাদের প্রস্তুতি ভালো আছে বলেও উল্লেখ করেন ইসি সচিব।

কমিশন সভায় চতুর্থ ধাপে বিশেষ কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘বিশেষ নির্দেশনা বলতে এটি যে, ল অ্যান্ড অর্ডার ঠিক থাকবে। কমিশন থেকে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক, এসপি এবং রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, নির্বাচনটি যেন ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল হয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়তই নির্বাচন কমিশনের অবস্থান একটাই– সেটা হলো ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন যখন হয়, তখন যেহেতু এটি ডোর টু ডোর অংশগ্রহণ থাকে, কোথাও কোথাও দু-একটি ঘটনা ঘটেছে। তৃতীয় ধাপে দু-তিনটি জায়গায় ঘটেছে। এটি খুবই সামান্য। সেগুলো তদন্তও হয়েছে। রিপোর্ট এসেছে আমাদের কাছে। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কমিশনকে পেশ করেছি।’

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.