রায় শুনে অঝোরে কাঁদলেন দীপনের স্ত্রী

জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর এজলাসেই কেঁদে ফেলেন তার স্ত্রী রাজিয়া রহমান। এ সময় দীপনের স্ত্রীর সঙ্গে থাকা সদস্যরা তাকে জড়িয়ে ধরে রাখেন। তাদের কাছে রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো কথা বলেননি।

পাশে থাকা দীপনের স্ত্রীর এক স্বজন বলেন, ‘এই মুহূর্তে কিছু বলার মতো অবস্থা নেই। আমাদের প্রতিক্রিয়া এখনই বলতে পারছি না।’ এভাবে কথা বলতে বলতে এজলাস কক্ষ থেকে তারা বেরিয়ে যান।

এ মামলায় আজ বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আট আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান।

রায় ঘোষণার সাথে সাথে আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ডা. রাজিয়া। আদালত কক্ষ কিছুক্ষণের জন্য নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এ সময় তিনি শুধু বলেন- ‘আমার যেন কেমন লাগছে’। ডা. রাজিয়া আদালত কক্ষে সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের জবাব দেননি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবি ইন্সপেক্টর ফজলুল হক তার পরিচয় দিলে তাকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার চার্জশিটভুক্ত আট আসামিকেই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। তারা সবাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মইনুল হাসান শামীম (২৪), সাংগঠনিক নাম সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান; মো. আ. সবুর (২৩), সাংগঠনিক নাম আ. সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে সাধ; খাইরুল ইসলাম (২৪), সাংগঠনিক নাম জামিল ওরফে রিফাত ওরফে ফাহিম ওরফে জিসান; মো. আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪), সাংগঠনিক নাম সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব; মো. মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (২৫), সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার; মো. শেখ আব্দুল্লাহ (২৭), সাংগঠনিক নাম জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের; সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক (৫০), সাংগঠনিক নাম সাগর ওরফে ইশতিয়াক ওরফে বড় ভাই এবং আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব (২৮), সাংগঠনিক নাম আবির ওরফে আদনান ওরফে আব্দুল্লাহ।

এর মধ্যে মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক এবং আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব পলাতক। কারাগারে থাকা সব আসামিই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

রায় উপলক্ষে সকাল সাড়ে আটটার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে গ্রেফতার ছয় আসামিকে আদালতে আনা হয়। এ সময় তাদের কোর্ট হাজতে রাখা হয় বলে জানান সিএমএম আদালতের হাজতের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম। বেলা সাড়ে ১১টার একটু আগে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ নভেম্বর রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের নিজ অফিসে দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুবৃত্তরা। ওই দিনই তার স্ত্রী রাজিয়া রহমান শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।

২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রে‌ট আদালতে দীপন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির সহকারী পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান। অভিযোগপত্রে ৮ জনকে অভিযুক্ত ও ১১ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.