ট্রাম্পের ইম্পিচমেন্ট মামলার শুনানি মঙ্গলবার

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইম্পিচমেন্ট মামলার শুনানি মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে৷ প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অনিশ্চিত হলেও ট্রাম্পের উপর নিষেধাজ্ঞার তোড়জোড় চলছে৷

ক্ষমতা ছাড়ার পর কি কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইম্পিচমেন্টের মামলা চালানো যায়? মূলত এই প্রশ্নকে হাতিয়ার করে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের আইনজীবীরা আসরে নামছেন৷ মঙ্গলবার মার্কিন সংসদের উচ্চ কক্ষ সিনেটে এই আইনি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে৷ এই নিয়ে ট্রাম্প দুই দুইবার ইম্পিচমেন্ট মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন৷

প্রথম মামলায় তাকে ইউক্রেনের উপর অবৈধ চাপের অভিযোগের জবাব দিতে হয়েছিল৷ এবার তার বিরুদ্ধে আরো মারাত্মক অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মূলে রয়েছে গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন সংসদ ভবনের উপর হামলার ঘটনা৷ ট্রাম্প সরাসরি সেই বিদ্রোহে প্ররোচনা দিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের সাংবিধানিক দায়িত্ব মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ সেই সঙ্গে হামলার দিন ইলেক্টোরাল ভোট গণনায় বাধা সৃষ্টির জন্যও তিনি দায়ী৷ মঙ্গলবার থেকে সিনেটে এই মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে৷ আগামী সপ্তাহান্ত বা তার পরেও এই আইনি প্রক্রিয়া চলতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷

মূল অভিযোগের জবাব দেবার বদলে কোনো প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আদৌ ইম্পিচমেন্ট চালানো যায় না– এমন যুক্তিকে হাতিয়ার করছেন ট্রাম্পের প্রতিনিধিরা৷ রিপাব্লিকান দলের বেশিরভাগ সংসদ সদস্যও একই কারণে ইম্পিচমেন্টের বিরোধিতা করছেন৷ সিনেটে দলের ৫০ জন সদস্যের মধ্যে ৪৫ জনই প্রাথমিক ভোটে এমন অবস্থান নিয়েছিলেন৷ মঙ্গলবার সবার আগে সাংবিধানিকতার যুক্তি তুলে ধরে মামলা খারিজ করার চেষ্টা করতে চায় ট্রাম্প-শিবির৷ সেই প্রশ্ন নিয়ে ভোটাভুটির উপর মামলার পরবর্তী ধাপ নির্ভর করবে৷ এমন প্রস্তাব অনুমোদিত না হলে বুধবার থেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তর্কবিতর্ক শুরু হবে৷

বুধবার সংসদের নিম্ন কক্ষের নয় জন ইম্পিচমেন্ট ম্যানেজার সবার আগে অভিযোগের সপক্ষে নিজেদের যুক্তি পেশ করবেন৷ ডেমোক্র্যাট দলের সংসদ সদস্যরা ৬ জানুয়ারি সংসদ ভবনের উপর হামলার ভয়াবহ প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার স্মৃতি জাগিয়ে তুলতে চান৷ বেশ কয়েকটি ভিডিও দেখিয়ে তাঁরা সেই বিদ্রোহের প্রকৃত রূপ তুলে ধরতে চান৷ তাদের মতে, উন্মত্ত জনতার এমন মারাত্মক আচরণ ও হিংসালীলার জন্য একা ট্রাম্পই দায়ী ছিলেন৷ নির্বাচনি কারচূপির যে অভিযোগকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্ররোচনা চালিয়ে গেছেন, সেই অভিযোগ তাঁরই আমলে প্রশাসন ও বিচার বিভাগ বার বার খণ্ডন করেছে৷ ট্রাম্পের আইনজীবীরা হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের ভূমিকা অস্বীকার করছেন৷ এই অভিযোগকে তাঁরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদীত হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করতে চান৷ নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে দুই পক্ষই আট ঘণ্টা করে সময় পাবে৷

এমন প্রেক্ষাপটে ইম্পিচমেন্ট মামলা সফল করতে হলে সিনেটে কমপক্ষে ১৭ জন রিপাব্লিকান সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন৷ ট্রাম্পের এমন মারাত্মক আচরণের প্রতি সমর্থন জানালে আখেরে তাদের এবং তাঁদের দলেরই ক্ষতি হবে বলে সতর্ক করে দিচ্ছেন ডেমোক্র্যাটরা৷ ২০২২ সালে সংসদের প্রায় অর্ধেক আসনের নির্বাচনে তার পরিণতি দেখা যেতে পারে৷ সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ইম্পিচমেন্টের পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন আদায় করা সম্ভব হলে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্প অভিযুক্ত হবেন৷ তারপর সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে সেনেট ভবিষ্যতে কোনো উচ্চ পদের জন্য ট্রাম্পের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে৷ রিপাব্লিকান দলের একটা অংশ এমন নিষেধাজ্ঞার পক্ষে সমর্থন দেখাতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে৷ সূত্র: এএফপি, এপি, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.