মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির অনুমোদন দেয়নি সরকার

মিয়ানমারে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে দেশটি থেকে জি টু জি ভিত্তিতে ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আনার বিষয়ে উত্থাপিত অর্থনৈতিক বিষয়ক ও ক্রয় সংক্রান্ত প্রস্তাবে সায় দেয়নি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অনলাইনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৪র্থ এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৫ম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ৪টি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ৯টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ক্রয় কমিটির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ৩টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ২টি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ১টি, বিদ্যুৎ বিভাগের ১টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ১টি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল।

তিনি বলেন, আজকের অর্থনৈতিক সংক্রান্ত সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয় আওতায় খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬ এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল মিয়ানমার থেকে ক্রয়ের প্রস্তাব বাতিল করা হয়।

মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই প্রস্তাবটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি, মিয়ানমার সম্পর্কে আরো জানতে হবে। মূলত এই পরিবর্তন আসার আগেই আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম। যাদের সঙ্গে চুক্তি করেছিলাম তারা একটি অবস্থায় আছে। তাই এটি যেভাবে আছে সেভাবে রাখার জন্য বলেছি, কিছু সময় নিতে বলেছি। যদি আমরা খুব বিপদগ্রস্ত না হই তাহলেই আমরা তাদের কাছে যাই না।

মুস্তফা কামাল বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সাধারণত আমাদের সেরকম ব্যবসায়ী সম্পর্ক নেই। বিশেষ পরিস্থিতিতে পেঁয়াজ আনতে হয়েছে তাদের কাছ থেকে। যখন আমাদের কোনো উপায় থাকে না তখন তাদের কাছে যাওয়া লাগে। তারাও সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়, কোনো ইস্যু রেইজ করে না। এবারও যখন এই প্রজেক্টটি আসে আমরা বলেছি ধীরে ধীরে আগাতে হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, তবে যদি আমাদের কিনতে হয় সে ক্ষেত্রে লেটার অব ক্রেডিটের মাধ্যমে কিনি। লেটার অব ক্রেডিটের শর্ত হলো কোনো অ্যাডভান্স পেমেন্ট করার ব্যবস্থা থাকে না। ফলে চূড়ান্ত যে চুক্তি করেছি সেই লেটার অব ক্রেডিটে বর্ণিত দ্রব্যাদি পূর্ণমাত্রায় শিপমেন্ট না হলে এবং লেটার অব ক্রেডিটের বিপরীতে শিপমেন্ট ডকুমেন্টস সাবমিট না করলে আমরা পেমেন্ট করি না। ডকুমেন্টস সাবমিট না করলে কোনো ব্যাংক টাকা পেমেন্ট করে না, ফলে আমাদের লস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

ক্রয় র্সংক্রান্ত সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক মিয়ানমার থেকে জি টু জি ভিত্তিতে ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল ৪১১ কোটি ২৮ লাখ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন চেয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সেই প্রস্তাবটি ফেরত পাঠায় ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.