সেনা অভ্যুত্থানের পথে মিয়ানমার!

ফের প্রবল রাজনৈতিক সংকটে মিয়ানমার। পার্লামেন্টে অধিবেশন শুরুকে কেন্দ্র করে নজিরবিহীন উত্তেজনা দেখা দিয়েছে দেশটির নির্বাচিত সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে। নানা বিষয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ অবস্থায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি সম্মান জানাতে শুক্রবার (৩০ জানুয়ারি) আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডাসহ ১২টি দেশ আলাদা বিবৃতি দিয়েছে।

নভেম্বর মাসের নির্বাচনে জালিয়াতি-অনিয়মের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সেনাপ্রধান সংবিধান ছুড়ে ফেলার মতো বাগাড়ম্বর করায় সামরিক বাহিনী বেসামরিক সরকার হটিয়ে ক্ষমতা দখল করতে পারে বলে গুঞ্জন উঠেছে।

দীর্ঘ সেনা শাসনের পর ২০১৫ সালে অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ক্ষমতায় আসে। অবশ্য স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও সীমান্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সামরিক বাহিনীর জন্য সংরক্ষিত।

এছাড়া পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসনও তাদের। গণতন্ত্রে উত্তরণের আগে সংবিধান সংশোধন করে ক্ষমতা নিজেদের কবজায় রাখে টাটমাডো নামে পরিচিত মিয়ানমার আর্মি।

নভেম্বর মাসের নির্বাচনে এনএলডি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। তারপর থেকে সামরিক বাহিনী নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ করে আসছে। বৃহস্পতিবার সেনাপ্রধান জেনারেল মিং অং হ্লাং বলেন, ২০০৮ সালের সংবিধান হচ্ছে সব আইনের মা। একে সবার সম্মান দেখানো উচিত। তবে প্রয়োজন হলে এই সংবিধান বাতিল করা হতে পারে।

তারপর থেকেই অভ্যুত্থানের গুঞ্জন শুরু হয়। সামরিক বাহিনী সমর্থিত মায়াবতি পত্রিকায়ও সে সুর দেখা যায়। অবশ্য রাজনৈতিক সংকট হলেও সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলে অভিপ্রায় নেই বলে দাবি মুখপাত্রের।

সামরিক বাহিনী বলছে, নির্বাচনে ৮৬ লাখ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। বিপরীতে জালিয়াতি হয়নি দাবি করে ‘দুর্বলতা’ ছিল বলে বিবৃতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে সংবিধানে নানা শর্ত যুক্ত করে সু চির ক্ষমতা কাটছাঁট করে সেনাবাহিনী।

দেশটির বিভিন্ন সূত্রে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে আগামী সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সূ চি সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে আলোচনা হওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।

সূত্র: এএফপি, আলজাজিরা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.