রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানে একমত চীন বাংলাদেশ মিয়ানমার

নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে কিছুটা নমনীয় অবস্থান দেখিয়েছে মিয়ানমার।

আজ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে ত্রিপক্ষীয় ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নমনীয় অবস্থান দেখায় দেশটি।

বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত এই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একমত পোষণ করেছে চীন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে শুরু হওয়া সামরিক বাহিনীর নিরাপত্তা অভিযানে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে দমন-পীড়ন চালানো হয়। ওই সময়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালের অভিযানের পর যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে; তাদের নাম, পরিচয় ও রাখাইন রাজ্যের কোন এলাকা থেকে এসেছে তার বিস্তারিত বিবরণসহ বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা হয়েছে।

নিবন্ধনের তথ্য মোতাবেক, মিয়ানমারের অভিযানের পর আট লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মিয়ানমার তালিকা থেকে ৪২ হাজার রোহিঙ্গা নাম যাচাই করেছে। তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ নাম মিয়ানমার প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে প্রায় ২৮ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ক্লিয়ার করেছে। কিন্তু তার মধ্যে কোনো রোহিঙ্গাকে এখনো ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না- তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থার অভাব দেখা দিয়েছে। এ কারণে দুই দফায় ফেরত পাঠানোর আয়োজন করা হলেও রোহিঙ্গাদের কেউ রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে চাননি। তারপর কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হলে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যায়। তার ওপর মিয়ানমারে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সব মিলিয়ে করোনা ও নির্বাচনের অজুহাত দেখিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার গতি ধীর করছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.