করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ভারতে যত সমস্যা

ভারতে প্রথম দুই দিনে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অসুস্থ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে কোভ্যাকসিন নিতে অনীহাও সামনে এসেছে। কারণ ভ্যাকসিন নেওয়ার পর দেশটির উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদে সরকারি হাসপাতালের এক ওয়ার্ড বয়ের মৃত্যু হয়।
তবে সেখানকার চিফ মেডিক্যাল অফিসার জানিয়েছেন, মৃত্যুর সঙ্গে ভ্যাকসিনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার আগেই তাঁর শরীর খারাপ ছিল। শনিবার ওই ওয়ার্ড বয় মণিপাল সিং-কে ভ্যাকসিন দেয়া হয়। রোববার তাঁর নিঃশ্বাসের কষ্ট ও বুকে ব্যথা হয়। পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট হলো, তিনি কার্ডিওজেনিক শক/সেপ্টিসেমিক শকে মারা গেছেন।

সোমবার ছিল ভারতে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার তৃতীয় দিন। আগের দুই দিনে দুই লাখেরও বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে মোরাদাবাদের মতো ঘটনা কোথাও ঘটেনি। এছাড়া ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর একজন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং তাঁকে পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি এখন ভালো আছেন। দিল্লিতে বাকি জনা পঞ্চাশেকের সামান্য জ্বর বা সাময়িক অস্বস্তি হয়েছিল। তাঁরা সকলেই এখন সুস্থ।

তবে বেশি সমস্যা হচ্ছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন নেওয়া নিয়ে। ইকনমিক টাইমসের রিপোর্ট, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, বিহারে স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভ্যাকসিন নিতে চাইছেন না। অনেকেই কনসেন্ট ফর্মে সই করেননি। তাই ওই তিন রাজ্যে প্রথম দিন লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ ভ্যাকসিনই দেয়া গিয়েছে। একমাত্র রাজস্থানে কোভ্যাকসিন দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালেও একই সমস্যা হয়েছিল। সেখানকার চিকিৎসাকর্মীরা বলেন, দিল্লি সরকারের সব হাসপাতালে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড দেয়া হচ্ছে।

তেলেঙ্গানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেন্দ্রন জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে কোভ্যাকসিন নিতে দ্বিধা আছে। সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো, তাঁদের প্রথমে ফর্ম ভরে সম্মতি দিতে হবে। তারপর তাঁদের টিকা দেয়া হয়। অনেকেই ফর্ম ভরছেন না। প্রথম দিনে ২০০-র বেশি কোভ্যাকসিন দেয়া যায়নি। তামিলনাড়ুতে প্রথম দিনে ৬০০টি কোভ্যাকসিন দেওয়ার টার্গেট ছিল। দেওয়া হয়েছে মাত্র ৯৯টি।

সম্প্রতি নরওয়েতে ফাইজারের ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বয়স্ক মানুষদের মৃত্যুর খবর এসেছে। তার উপর ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে তা দেওয়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই সব কারণে কোভ্যাকসিন নিয়ে ভারতের স্বাস্থ্যকর্মীরাই সংশয়ে পড়েছেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.